, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার আগে জামায়াত, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিচার করতে হবে’- আদালতে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০১:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৩৮২ Time View


অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিন রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে শাজাহান খান বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগে জামায়াত, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচার করতে হবে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে শাজাহান খানসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। এ সময় তিনি বলেন, আসামিরা হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার করার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

শাজাহান খান হাত তুলে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর তিনি বলেন, আমার হার্টে পাঁচটা ব্লক। আমি আন্দোলনের সময় চিকিৎসাধীন ছিলাম। আমাকে গ্রেফতার করে প্রথম যখন চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন তার দুই দিনের মাথায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমি পিপি সাহেবের কথার উত্তরে কিছু বলবো না। আমার অনুরোধ, শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হয় তাহলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ দেওয়া যেতে পারে।

এরপর তিনি বলেন, মামলা যদি দিতেই হয়, তাহলে এসব গায়েবি মামলা না দিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা তাকে কটাক্ষ করে কথা বলা শুরু করেন। এক পর্যায়ে সৈকত কথা বলতে চাইলে আদালতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।

সৈকত জানান, আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও হত্যাকাণ্ড হয়নি। এ সময় এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীরা আবার হৈ-হুল্লোড় শুরু করেন। এ সময় শাজাহান খান বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আপনার সামনেই আমাদের যেভাবে থ্রেট দেওয়া হচ্ছে, আপনি এর বিচার করবেন।

আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে মহানগর পিপি দাঁড়িয়ে বলেন, আসামিদের উস্কানিমূলক কথাতে আদালতের পরিস্থিতি খারাপ হয়। আমি আদালতকে অনুরোধ করবো, আসামিদের কথা বলার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। এ সময় আবারও শাজাহান খান বলেন, আমাদের কথা বলাও যাবে না।

এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালত শাজাহান খানের একদিন, আতিকুলের ও সৈকতের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এজলাস থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার পথে শাজাহান খান বলেন, শেখা হাসিনার যে অভিযোগের বিচার হচ্ছে, সেই অভিযোগের চেয়ে একাত্তরের অভিযোগ গুরুতর। লাখ লাখ মানুষকে হত্যায় জামায়াত জড়িত। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ তিন হাজার সেনা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। এরশাদ সাহেবও হত্যা চালিয়েছে। তাদের বিচার আগে করে তারপর শেখ হাসিনার বিচার। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, জুলাই হত্যাকাণ্ডে অনুতপ্ত কিনা? জবাবে শাজাহান খান বলেন, অবশ্যই অনুতপ্ত।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময় গত ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন মো. আরিফ। এরপর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ২৩৩ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

২৩/৪/২০২৫/সুরমা টিভি/শামীমা

Popular Post

শেখ হাসিনার আগে জামায়াত, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিচার করতে হবে’- আদালতে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান

Update Time : ০১:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫


অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিন রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে শাজাহান খান বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগে জামায়াত, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচার করতে হবে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে শাজাহান খানসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। এ সময় তিনি বলেন, আসামিরা হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার করার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

শাজাহান খান হাত তুলে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর তিনি বলেন, আমার হার্টে পাঁচটা ব্লক। আমি আন্দোলনের সময় চিকিৎসাধীন ছিলাম। আমাকে গ্রেফতার করে প্রথম যখন চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন তার দুই দিনের মাথায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমি পিপি সাহেবের কথার উত্তরে কিছু বলবো না। আমার অনুরোধ, শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হয় তাহলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ দেওয়া যেতে পারে।

এরপর তিনি বলেন, মামলা যদি দিতেই হয়, তাহলে এসব গায়েবি মামলা না দিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা তাকে কটাক্ষ করে কথা বলা শুরু করেন। এক পর্যায়ে সৈকত কথা বলতে চাইলে আদালতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।

সৈকত জানান, আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও হত্যাকাণ্ড হয়নি। এ সময় এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীরা আবার হৈ-হুল্লোড় শুরু করেন। এ সময় শাজাহান খান বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আপনার সামনেই আমাদের যেভাবে থ্রেট দেওয়া হচ্ছে, আপনি এর বিচার করবেন।

আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে মহানগর পিপি দাঁড়িয়ে বলেন, আসামিদের উস্কানিমূলক কথাতে আদালতের পরিস্থিতি খারাপ হয়। আমি আদালতকে অনুরোধ করবো, আসামিদের কথা বলার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। এ সময় আবারও শাজাহান খান বলেন, আমাদের কথা বলাও যাবে না।

এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালত শাজাহান খানের একদিন, আতিকুলের ও সৈকতের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এজলাস থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার পথে শাজাহান খান বলেন, শেখা হাসিনার যে অভিযোগের বিচার হচ্ছে, সেই অভিযোগের চেয়ে একাত্তরের অভিযোগ গুরুতর। লাখ লাখ মানুষকে হত্যায় জামায়াত জড়িত। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ তিন হাজার সেনা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। এরশাদ সাহেবও হত্যা চালিয়েছে। তাদের বিচার আগে করে তারপর শেখ হাসিনার বিচার। এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, জুলাই হত্যাকাণ্ডে অনুতপ্ত কিনা? জবাবে শাজাহান খান বলেন, অবশ্যই অনুতপ্ত।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময় গত ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন মো. আরিফ। এরপর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ২৩৩ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

২৩/৪/২০২৫/সুরমা টিভি/শামীমা