, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না, ১০০ দিন পূর্তিতে ট্রাম্পের হুঙ্কার

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ৪ ঘন্টা আগে
  • ১৩৭১ Time View


অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
মিশিগানে এক সমাবেশে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি ‘কমিউনিস্ট বিপ্লবী বাম বিচারকদের’ বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি দাবি করেছেন, এই বিচারকরা তার ক্ষমতা খর্ব করার চেষ্টা করছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

সমাবেশে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের নিয়ে তৈরি একটি বিতর্কিত ভিডিও দেখান, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃতদের এল সালভাদরের একটি কুখ্যাত কারাগারে প্রেরণের দৃশ্য দেখানো হয়। হলিউড স্টাইলের ড্রামা সংগীতের সঙ্গে ভিডিওটি প্রদর্শনকালে সমাবেশস্থলে উল্লসিত জনতা স্লোগান দিতে থাকে।

গত নভেম্বরে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে মিশিগানের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, তার শুল্ক নীতি যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করবে। তবে ডেট্রয়েটের কাছে ওয়ারেন শহরের বিশাল স্পোর্টস অ্যারেনায় সমাবেশে উপস্থিতি ছিল স্বল্প। তার ৮৯ মিনিটের এলোমেলো বক্তৃতা শেষ হওয়ার আগেই অনেককে স্থান ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

ট্রাম্প দাবি করেন, আমাদের প্রশাসনের প্রথম ১০০ দিনই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল! গত ১০০ বছরে ওয়াশিংটনে এত বড় পরিবর্তন আর কেউ আনতে পারেনি।

সাবেক প্রশাসনের বিরুদ্ধে সীমান্তে ‘ব্যাপক অনুপ্রবেশ’ ঘটানোর এবং গ্যাং, কার্টেল ও সন্ত্রাসীদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা ব্যাপক অনুপ্রবেশ ও অভিবাসনের পক্ষে, আমরা ব্যাপক বহিষ্কারের নীতি নিয়ে এগোচ্ছি।

১৭৯৮ সালের ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ ব্যবহারের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে তিনি বলেন, এই আইন দিয়ে শত্রু দেশের নাগরিকদের দ্রুত বহিষ্কার করা সম্ভব। একই সঙ্গে আদালতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কমিউনিস্ট বিপ্লবী বাম বিচারকরা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইছে। সুপ্রিম কোর্ট যেন এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।

সমাবেশে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলের শেয়ার করা একটি ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে কারাগারে কয়েদিদের মাথা কামানো ও নির্যাতনের দৃশ্য দেখা গেছে। থ্রিলার মুভির মতো সংগীতসহ ভিডিওটি প্রদর্শনের পর স্ক্রিনে দেখা যায়— ‘১০০ দিনের মহিমা’।

সমাবেশস্থলে ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’, ‘গোল্ডেন এজ অব অ্যামেরিকা’-এর মতো স্লোগান সম্বলিত ব্যানার দেখা যায়। যদিও মিশিগানের বেকারত্বের হার টানা তিন মাস ধরে বাড়ছে।

বক্তৃতায় ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়লাভের মিথ্যা দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন, জো বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে কটাক্ষ করেন এবং তার বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের ‘ফেক নিউজ’ প্রচারের অভিযোগ তোলেন।

গাড়ি ও যন্ত্রাংশে উচ্চ শুল্ক আরোপের নীতির পক্ষে যুক্তি দেন ট্রাম্প। যদিও হোয়াইট হাউস একই দিন শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দেয়। তিনি ফেডারেল সরকার ও বেসরকারি খাত থেকে ডাইভার্সিটি, ইকুইটি অ্যান্ড ইনক্লুশন (ডিইআই) নীতি বাতিলের কথা উল্লেখ করে গর্বিতভাবে বলেন, সরকারি নীতিতে এখন শুধু দুই লিঙ্গ স্বীকৃত।

সমাবেশে টেসলা ও স্পেসএক্সের কর্ণধার ইলন মাস্কের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, তার প্রতি যা করা হয়েছে তা অন্যায়। এছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের প্রতিও আস্থা প্রকাশ করেন তিনি।

ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান কেন মার্টিন বলেন, ট্রাম্পের এই করুণ প্রদর্শনী ১০০ দিন ধরে যাদের ক্ষতি করা হয়েছে তাদের কোনও কাজে আসবে না। মিশিগানবাসীসহ পুরো দেশই তাকে চিনে গেছে।

৩০/৪/২০২৫/সুরমা টিভি//শামীমা

Popular Post

কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না, ১০০ দিন পূর্তিতে ট্রাম্পের হুঙ্কার

Update Time : ৪ ঘন্টা আগে


অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
মিশিগানে এক সমাবেশে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি ‘কমিউনিস্ট বিপ্লবী বাম বিচারকদের’ বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি দাবি করেছেন, এই বিচারকরা তার ক্ষমতা খর্ব করার চেষ্টা করছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

সমাবেশে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের নিয়ে তৈরি একটি বিতর্কিত ভিডিও দেখান, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃতদের এল সালভাদরের একটি কুখ্যাত কারাগারে প্রেরণের দৃশ্য দেখানো হয়। হলিউড স্টাইলের ড্রামা সংগীতের সঙ্গে ভিডিওটি প্রদর্শনকালে সমাবেশস্থলে উল্লসিত জনতা স্লোগান দিতে থাকে।

গত নভেম্বরে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে মিশিগানের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, তার শুল্ক নীতি যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করবে। তবে ডেট্রয়েটের কাছে ওয়ারেন শহরের বিশাল স্পোর্টস অ্যারেনায় সমাবেশে উপস্থিতি ছিল স্বল্প। তার ৮৯ মিনিটের এলোমেলো বক্তৃতা শেষ হওয়ার আগেই অনেককে স্থান ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

ট্রাম্প দাবি করেন, আমাদের প্রশাসনের প্রথম ১০০ দিনই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল! গত ১০০ বছরে ওয়াশিংটনে এত বড় পরিবর্তন আর কেউ আনতে পারেনি।

সাবেক প্রশাসনের বিরুদ্ধে সীমান্তে ‘ব্যাপক অনুপ্রবেশ’ ঘটানোর এবং গ্যাং, কার্টেল ও সন্ত্রাসীদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা ব্যাপক অনুপ্রবেশ ও অভিবাসনের পক্ষে, আমরা ব্যাপক বহিষ্কারের নীতি নিয়ে এগোচ্ছি।

১৭৯৮ সালের ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ ব্যবহারের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে তিনি বলেন, এই আইন দিয়ে শত্রু দেশের নাগরিকদের দ্রুত বহিষ্কার করা সম্ভব। একই সঙ্গে আদালতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কমিউনিস্ট বিপ্লবী বাম বিচারকরা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইছে। সুপ্রিম কোর্ট যেন এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।

সমাবেশে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলের শেয়ার করা একটি ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে কারাগারে কয়েদিদের মাথা কামানো ও নির্যাতনের দৃশ্য দেখা গেছে। থ্রিলার মুভির মতো সংগীতসহ ভিডিওটি প্রদর্শনের পর স্ক্রিনে দেখা যায়— ‘১০০ দিনের মহিমা’।

সমাবেশস্থলে ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’, ‘গোল্ডেন এজ অব অ্যামেরিকা’-এর মতো স্লোগান সম্বলিত ব্যানার দেখা যায়। যদিও মিশিগানের বেকারত্বের হার টানা তিন মাস ধরে বাড়ছে।

বক্তৃতায় ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়লাভের মিথ্যা দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন, জো বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে কটাক্ষ করেন এবং তার বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের ‘ফেক নিউজ’ প্রচারের অভিযোগ তোলেন।

গাড়ি ও যন্ত্রাংশে উচ্চ শুল্ক আরোপের নীতির পক্ষে যুক্তি দেন ট্রাম্প। যদিও হোয়াইট হাউস একই দিন শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দেয়। তিনি ফেডারেল সরকার ও বেসরকারি খাত থেকে ডাইভার্সিটি, ইকুইটি অ্যান্ড ইনক্লুশন (ডিইআই) নীতি বাতিলের কথা উল্লেখ করে গর্বিতভাবে বলেন, সরকারি নীতিতে এখন শুধু দুই লিঙ্গ স্বীকৃত।

সমাবেশে টেসলা ও স্পেসএক্সের কর্ণধার ইলন মাস্কের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, তার প্রতি যা করা হয়েছে তা অন্যায়। এছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের প্রতিও আস্থা প্রকাশ করেন তিনি।

ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান কেন মার্টিন বলেন, ট্রাম্পের এই করুণ প্রদর্শনী ১০০ দিন ধরে যাদের ক্ষতি করা হয়েছে তাদের কোনও কাজে আসবে না। মিশিগানবাসীসহ পুরো দেশই তাকে চিনে গেছে।

৩০/৪/২০২৫/সুরমা টিভি//শামীমা