দখলদার ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় গাজায় একদিনে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেসি জানিয়েছে, বুধবার (১৪ মে) রাতভর ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজায় অন্তত ১০৩ জন নিহত হয়েছেন।
বৃহম্পতিবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরাইলি হামলায় নিহতদের মধ্যে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের ১৩ জন রয়েছেন। ওই শিবিরের একটি প্রার্থনা কক্ষ এবং দাতব্য হাসপাতালে হামলা করা হয়েছে।
হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বিবিসিকে বলেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে খান ইউনিস থেকে ৫৬ জন, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া থেকে চারজন এবং মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল।
নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ছিল। মুখপাত্র আরও জানান, খান ইউনিসের ১৩ সদস্যের সামুর পরিবারের নাম নাগরিক নিবন্ধন থেকে পুরোপুরি মুছে ফেলা হয়েছে।
এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালানোর পাশাপাশি উত্তরে বেসামরিক নাগরিকদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল।
এরইমধ্যে আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাজা সিটির বাসিন্দাদের ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ‘তীব্র হামলা’ শুরু হওয়ার আগেই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য চলে যেতে বলা হয়েছে।
বিশেষভাবে ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, আল-শিফা হাসপাতাল এবং তিনটি প্রাক্তন স্কুল খালি করার কথা বলেছে ইসরাইল এবং তারা অভিযোগ করেছে, ভবনগুলো হামাস তাদের কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে।
তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, সেখানে হাজার হাজার বেসামরিক লোক আশ্রয় নিয়েছে এবং এই এলাকাগুলো থেকে তাদের সরিয়ে নিতে সময় লাগবে। এতে বিপুল সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে।
বলেন, ‘আমরা গোটা বিশ্বের উদ্দেশে বলছি, ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করুন এবং আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে চলমান হত্যাকাণ্ড ও যুদ্ধ বন্ধে সাহায্য করুন। এই অনাহার থামান, কারণ এর মূল লক্ষ্যই হলো মানুষকে উচ্ছেদ করা। আমরা কখনোই দেশত্যাগ করব না, কখনোই ফিলিস্তিন ছেড়ে যাব না, আমরা এখানেই থাকব।’
মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে নাকবা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে জন্ম হয় ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের। এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়। আর এর পরদিন ১৫ মে থেকে ফিলিস্তিনিদের ওপর নেমে আসে মহাবিপর্যয় বা আল-নাকবা।
রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং ইহুদি বসতি স্থাপন করতে গিয়ে অন্তত ৭ লাখ ৫০ হাজার সাধারণ ফিলিস্তিনিকে তাদের জন্মভূমি থেকে জোর করে উচ্ছেদ করা হয়। দিনটি পরবর্তীকালে বার্ষিকভাবে নাকবা দিবস হিসেবে পালিত হয়।

SURMA TV 24 











