, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় ভারতীয় অধ্যাপক গ্রেপ্তার

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ১০:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
  • ১৩৯৪ Time View


অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ায় ভারতের একটি অভিজাত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম আলি খান মাহমুদাবাদ। তিনি হরিয়ানা রাজ্যের সোনিপাতে অবস্থিত আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। গতকাল রোববার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। এর এক সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এর আগে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলা ঘিরে প্রায় তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়েছিল পারমাণবিক শক্তিধর এ দুই প্রতিবেশী দেশ।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী কার্যকলাপ, সশস্ত্র বিদ্রোহ বা রাষ্ট্রদ্রোহে উসকানি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে প্রযোজ্য ভারতীয় দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক পুলিশ কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ৪২ বছর বয়সী মাহমুদাবাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল স্ক্রল ডট ইন-এর এক প্রতিবেদনে মাহমুদাবাদের আইনজীবীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, গত শনিবার হরিয়ানার ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) যুব শাখার সাধারণ সম্পাদক যোগেশ জাতেরির অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে প্রতিদিনের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে মাহমুদাবাদের মন্তব্যের কারণে হরিয়ানা রাজ্য নারী কমিশন তাঁকে তলব করে। এর কয়েক দিন পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

৬ মে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিঁদুরের’ বিষয়ে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং নিয়মিত ব্রিফিং করেছিলেন।

৮ মে এক ফেসবুক পোস্টে মাহমুদাবাদ লিখেছিলেন, ‘অনেক ডানপন্থী বিশ্লেষক কর্নেল সোফিয়া কুরেশির প্রশংসা করছেন দেখে আমি খুব খুশি। কিন্তু একইভাবে তাঁরা গণপিটুনির শিকার, নির্বিচার ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং বিজেপির ঘৃণার রাজনীতির শিকার মানুষদেরও ভারতীয় নাগরিক হিসেবে রক্ষার জোর দাবি তুলতে পারতেন।’

মাহমুদাবাদ আরও লিখেছেন, ‘দুই নারী সেনা কর্মকর্তার তথ্য উপস্থাপনের চিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই চিত্রের সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকা উচিত। তা না হলে সেটি নিছক ভণ্ডামি।’

পোস্টটিতে মুসলিম ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা সোফিয়া কুরেশি, মুসলিমদের ওপর হামলা, গণপিটুনি এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই বাড়িঘর ভেঙে ফেলার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছিল।

ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, আজ সোমবার হরিয়ানা নারী কমিশন জানায়, অধ্যাপকের ওই বক্তব্য ‘ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর নারী কর্মকর্তাদের অবমাননা করেছে এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ উসকে দিয়েছে’। তাই তাঁকে তলব করা হয়েছে।

মাহমুদাবাদ তাঁর মন্তব্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, তাঁকে ভুল বোঝা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার মন্তব্যগুলো ছিল সাধারণ নাগরিক ও সৈনিকদের জীবন রক্ষার বিষয়ে। আমার কথায় নারীবিরোধিতার কোনো ইঙ্গিত নেই যে এটিকে নারীবিদ্বেষী বলা যাবে।’

ভারতের অধ্যাপক ও সমাজকর্মীরা মাহমুদাবাদের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন।

সূত্র: আল জাজিরা

১৯/৫/২০২৫/ সুরমা টিভি ২৪/শামীমা

Popular Post

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় ভারতীয় অধ্যাপক গ্রেপ্তার

Update Time : ১০:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫


অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ায় ভারতের একটি অভিজাত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম আলি খান মাহমুদাবাদ। তিনি হরিয়ানা রাজ্যের সোনিপাতে অবস্থিত আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। গতকাল রোববার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। এর এক সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এর আগে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলা ঘিরে প্রায় তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়েছিল পারমাণবিক শক্তিধর এ দুই প্রতিবেশী দেশ।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী কার্যকলাপ, সশস্ত্র বিদ্রোহ বা রাষ্ট্রদ্রোহে উসকানি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে প্রযোজ্য ভারতীয় দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক পুলিশ কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ৪২ বছর বয়সী মাহমুদাবাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল স্ক্রল ডট ইন-এর এক প্রতিবেদনে মাহমুদাবাদের আইনজীবীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, গত শনিবার হরিয়ানার ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) যুব শাখার সাধারণ সম্পাদক যোগেশ জাতেরির অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে প্রতিদিনের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে মাহমুদাবাদের মন্তব্যের কারণে হরিয়ানা রাজ্য নারী কমিশন তাঁকে তলব করে। এর কয়েক দিন পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

৬ মে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিঁদুরের’ বিষয়ে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং নিয়মিত ব্রিফিং করেছিলেন।

৮ মে এক ফেসবুক পোস্টে মাহমুদাবাদ লিখেছিলেন, ‘অনেক ডানপন্থী বিশ্লেষক কর্নেল সোফিয়া কুরেশির প্রশংসা করছেন দেখে আমি খুব খুশি। কিন্তু একইভাবে তাঁরা গণপিটুনির শিকার, নির্বিচার ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং বিজেপির ঘৃণার রাজনীতির শিকার মানুষদেরও ভারতীয় নাগরিক হিসেবে রক্ষার জোর দাবি তুলতে পারতেন।’

মাহমুদাবাদ আরও লিখেছেন, ‘দুই নারী সেনা কর্মকর্তার তথ্য উপস্থাপনের চিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই চিত্রের সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকা উচিত। তা না হলে সেটি নিছক ভণ্ডামি।’

পোস্টটিতে মুসলিম ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা সোফিয়া কুরেশি, মুসলিমদের ওপর হামলা, গণপিটুনি এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই বাড়িঘর ভেঙে ফেলার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছিল।

ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, আজ সোমবার হরিয়ানা নারী কমিশন জানায়, অধ্যাপকের ওই বক্তব্য ‘ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর নারী কর্মকর্তাদের অবমাননা করেছে এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ উসকে দিয়েছে’। তাই তাঁকে তলব করা হয়েছে।

মাহমুদাবাদ তাঁর মন্তব্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, তাঁকে ভুল বোঝা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার মন্তব্যগুলো ছিল সাধারণ নাগরিক ও সৈনিকদের জীবন রক্ষার বিষয়ে। আমার কথায় নারীবিরোধিতার কোনো ইঙ্গিত নেই যে এটিকে নারীবিদ্বেষী বলা যাবে।’

ভারতের অধ্যাপক ও সমাজকর্মীরা মাহমুদাবাদের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন।

সূত্র: আল জাজিরা

১৯/৫/২০২৫/ সুরমা টিভি ২৪/শামীমা