, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী:ইসরায়েলের চেষ্টায় থামবে না ইরানের পারমাণু কর্মসূচি।

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • ১৩৮৮ Time View


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে ইসরায়েলের একক সামরিক পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। 

ইসরায়েলকে সতর্ক করে সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েল যদি একা ইরানে হামলার চেষ্টা করে, তবে তা এ অঞ্চলে ভয়াবহ পরিণতির সূচনা করতে পারে।

শনিবার (২৪ মে) ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেরি এসব কথা বলেন। তিনি ইরান-যুক্তরাষ্ট্র চলমান পারমাণবিক আলোচনা ও তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার হুমকি নিয়ে ইসরায়েলের ভূমিকার বিষয়ে নিজের মত তুলে ধরেন।
সাক্ষাৎকারে জন কেরি বলেন, ট্রাম্প সম্ভাব্য সর্বোত্তম চুক্তি করতে পারবেন। আমি বিশ্বাস করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটা সমাধান অবশ্যই বের করবেন। আমি খুশি যে, প্রেসিডেন্ট এটি অনুসরণ করছেন। আমি মনে করি এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামাতে ইসরায়েল একা কিছুই করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক সমর্থন ছাড়া তেহরানে হামলা চালানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

কেরি আরও বলেন, তারা (ইসরায়েল) হয়তো ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানতে পারবে, কিছু ক্ষতি করতেও সক্ষম হবে। কিন্তু এর ফলে গোটা অঞ্চলে একটি বিপজ্জনক সংকটের সূচনা হবে, যার ফলাফল হবে ভয়াবহ।

এদিকে শুক্রবার (২৩ মে) ইতালির রাজধানী রোমে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পঞ্চম দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান জানিয়েছে, এবারের বৈঠকে কিছু নতুন প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়েছে। এগুলো এখন তেহরান ও ওয়াশিংটনে মূল্যায়নের পর পরবর্তী বৈঠকের সময় নির্ধারণ হবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, এই জটিল সমস্যার সমাধান দুই-তিনটি বৈঠকে সম্ভব নয়। তিনি রোমে ওমানি দূতাবাসে অনুষ্ঠিত আলোচনাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যতম পেশাদার বৈঠক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং জানান, ইরান তার অবস্থান স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার বলে মনে করছেন তারা।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও তাদের কঠোর অবস্থানে অনড় রয়েছে। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইরানকে ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিও সীমিত করতে হবে।

ইরান বলছে, তারা পরমাণু চুক্তি মেনে চলতে চায়। তবে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি ছাড়া তারা কোনো চুক্তিতে অগ্রসর হবে না। বিশেষ করে ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা চুক্তি প্রত্যাহারের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে- এটাই তাদের প্রধান শর্ত।

এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের একক হুমকি বা পদক্ষেপ যে তেহরানকে দমাতে পারবে না, জন কেরির বক্তব্যে সে বার্তাই উঠে এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে এই বার্তা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

Popular Post

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী:ইসরায়েলের চেষ্টায় থামবে না ইরানের পারমাণু কর্মসূচি।

Update Time : ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে ইসরায়েলের একক সামরিক পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। 

ইসরায়েলকে সতর্ক করে সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েল যদি একা ইরানে হামলার চেষ্টা করে, তবে তা এ অঞ্চলে ভয়াবহ পরিণতির সূচনা করতে পারে।

শনিবার (২৪ মে) ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেরি এসব কথা বলেন। তিনি ইরান-যুক্তরাষ্ট্র চলমান পারমাণবিক আলোচনা ও তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার হুমকি নিয়ে ইসরায়েলের ভূমিকার বিষয়ে নিজের মত তুলে ধরেন।
সাক্ষাৎকারে জন কেরি বলেন, ট্রাম্প সম্ভাব্য সর্বোত্তম চুক্তি করতে পারবেন। আমি বিশ্বাস করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটা সমাধান অবশ্যই বের করবেন। আমি খুশি যে, প্রেসিডেন্ট এটি অনুসরণ করছেন। আমি মনে করি এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামাতে ইসরায়েল একা কিছুই করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক সমর্থন ছাড়া তেহরানে হামলা চালানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

কেরি আরও বলেন, তারা (ইসরায়েল) হয়তো ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানতে পারবে, কিছু ক্ষতি করতেও সক্ষম হবে। কিন্তু এর ফলে গোটা অঞ্চলে একটি বিপজ্জনক সংকটের সূচনা হবে, যার ফলাফল হবে ভয়াবহ।

এদিকে শুক্রবার (২৩ মে) ইতালির রাজধানী রোমে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পঞ্চম দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান জানিয়েছে, এবারের বৈঠকে কিছু নতুন প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়েছে। এগুলো এখন তেহরান ও ওয়াশিংটনে মূল্যায়নের পর পরবর্তী বৈঠকের সময় নির্ধারণ হবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, এই জটিল সমস্যার সমাধান দুই-তিনটি বৈঠকে সম্ভব নয়। তিনি রোমে ওমানি দূতাবাসে অনুষ্ঠিত আলোচনাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যতম পেশাদার বৈঠক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং জানান, ইরান তার অবস্থান স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার বলে মনে করছেন তারা।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও তাদের কঠোর অবস্থানে অনড় রয়েছে। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইরানকে ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিও সীমিত করতে হবে।

ইরান বলছে, তারা পরমাণু চুক্তি মেনে চলতে চায়। তবে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি ছাড়া তারা কোনো চুক্তিতে অগ্রসর হবে না। বিশেষ করে ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা চুক্তি প্রত্যাহারের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে- এটাই তাদের প্রধান শর্ত।

এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের একক হুমকি বা পদক্ষেপ যে তেহরানকে দমাতে পারবে না, জন কেরির বক্তব্যে সে বার্তাই উঠে এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে এই বার্তা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।