, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড় গোলাপগঞ্জে বিএমএসএফ এর কমিটি গঠন, সভাপতি বদরুল আলম, সম্পাদক শাহ আলম এবার শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ। শহীদুল আলমদের বহনকারী জাহাজ আ’টকের তথ্য জানাল ফ্রিডম ফ্লোটিলা সাংবাদিক ইলিয়াস : এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না নিজেদের নির্দেশনা মানছে সরকার? উপদেষ্টাদের ঘনঘন বিদেশ সফর ও প্রধান উপদেষ্টার বহর নিয়ে যত সমালোচনা। মৃত্যুর দুইদিন পার, দাফন নিয়ে সরকার-পরিবারের দ্বন্দ্বে হাসপাতালেই তোফায়েল আহমেদের মরদেহ। খুলনায় ঘুমন্ত যুবককে গু’লি করে হ’ত্যা। ৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি।
নোটিশ :
মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড় গোলাপগঞ্জে বিএমএসএফ এর কমিটি গঠন, সভাপতি বদরুল আলম, সম্পাদক শাহ আলম এবার শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ। শহীদুল আলমদের বহনকারী জাহাজ আ’টকের তথ্য জানাল ফ্রিডম ফ্লোটিলা সাংবাদিক ইলিয়াস : এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না নিজেদের নির্দেশনা মানছে সরকার? উপদেষ্টাদের ঘনঘন বিদেশ সফর ও প্রধান উপদেষ্টার বহর নিয়ে যত সমালোচনা। মৃত্যুর দুইদিন পার, দাফন নিয়ে সরকার-পরিবারের দ্বন্দ্বে হাসপাতালেই তোফায়েল আহমেদের মরদেহ। খুলনায় ঘুমন্ত যুবককে গু’লি করে হ’ত্যা। ৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি।

এবার বাংলাদেশকে এড়িয়ে এগোচ্ছে ভারত, বিকল্প বাণিজ্য পথে আগ্রহ।

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • ১৪৭৩ Time View


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে চিড় ধরেছে। বিশেষ করে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক শীতলতা ও নানা বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে ভারত এখন বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প বাণিজ্যপথ তৈরিতে জোর দিচ্ছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ‘ল্যান্ডলকড’, সমুদ্রপথে তাদের একমাত্র ‘গার্জিয়ান’ বাংলাদেশ। 

এই মন্তব্য ভারতের কাছে নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ভারতের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মহলে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশের চীনমুখী অবস্থান ও এই ধরনের বক্তব্য দেশটির জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করছে।

এই অবস্থায় ভারত বিশেষভাবে মনোযোগ দিচ্ছে বিকল্প বাণিজ্যপথ তৈরিতে। যার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট প্রজেক্ট। প্রকল্পটি কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দরে পৌঁছায়, এরপর নদীপথে পালেতওয়া ও সড়কপথে মিজোরাম হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুক্ত হয়। এর মাধ্যমে ‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডোর এড়িয়ে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হচ্ছে।

ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে একাধিক স্থলবন্দর ব্যবহার বন্ধ রেখেছে, তবে সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এর লক্ষ্য হলো উত্তর-পূর্ব ভারতের ব্যবসায়ী সমাজকে সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের ‘গার্জিয়ান’ অবস্থানকে খর্ব করা।

আগরতলা-কলকাতা রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে সরাসরি বাণিজ্যপথ তৈরির উদ্যোগ একসময় অনেক দূর এগিয়েছিল শেখ হাসিনার সময়ে। কিন্তু বর্তমানে ওই প্রকল্প স্থগিত অবস্থায় আছে। আগরতলায় নির্মিত আন্তর্জাতিক স্টেশন কার্যত অকেজো হয়ে রয়েছে। এই পথে রেল চলাচল বন্ধ, আলোচনা বন্ধ।

যদিও কালাদান প্রকল্প কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতা এই প্রকল্পের অগ্রগতিকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। সেখানে সেনা জুন্টার নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির উপস্থিতি ভারতীয় বিনিয়োগ ও শ্রমিকদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক মহলের একাধিক বিশেষজ্ঞ যেমন কর্নেল শান্তনু রায় এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য মনে করেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প পথ তৈরিই সময়ের দাবি। তবে তারা এটাও মানছেন যে, মিয়ানমার পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অনিন্দ্যোজ্যোতি মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ যত চীনমুখী হবে, ভারত তত বিকল্প কৌশলে এগোবে। তবে স্বাভাবিক বাণিজ্য রুদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, কালাদান প্রকল্প কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, তা চিকেনস নেকের যথাযথ বিকল্প হতে পারবে না।

দুই দেশের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ ও বাণিজ্যিক কৌশলের সমন্বয়ে ভারত এখন স্পষ্টভাবে বাংলাদেশকে বাইপাস করে এগোতে চাইছে। ফলে, শুধু কূটনৈতিক স্তরে নয়, এই উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চিত্রেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড়

এবার বাংলাদেশকে এড়িয়ে এগোচ্ছে ভারত, বিকল্প বাণিজ্য পথে আগ্রহ।

Update Time : ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে চিড় ধরেছে। বিশেষ করে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক শীতলতা ও নানা বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে ভারত এখন বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প বাণিজ্যপথ তৈরিতে জোর দিচ্ছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ‘ল্যান্ডলকড’, সমুদ্রপথে তাদের একমাত্র ‘গার্জিয়ান’ বাংলাদেশ। 

এই মন্তব্য ভারতের কাছে নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ভারতের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মহলে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশের চীনমুখী অবস্থান ও এই ধরনের বক্তব্য দেশটির জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করছে।

এই অবস্থায় ভারত বিশেষভাবে মনোযোগ দিচ্ছে বিকল্প বাণিজ্যপথ তৈরিতে। যার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলো কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট প্রজেক্ট। প্রকল্পটি কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দরে পৌঁছায়, এরপর নদীপথে পালেতওয়া ও সড়কপথে মিজোরাম হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুক্ত হয়। এর মাধ্যমে ‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডোর এড়িয়ে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হচ্ছে।

ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে একাধিক স্থলবন্দর ব্যবহার বন্ধ রেখেছে, তবে সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এর লক্ষ্য হলো উত্তর-পূর্ব ভারতের ব্যবসায়ী সমাজকে সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের ‘গার্জিয়ান’ অবস্থানকে খর্ব করা।

আগরতলা-কলকাতা রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে সরাসরি বাণিজ্যপথ তৈরির উদ্যোগ একসময় অনেক দূর এগিয়েছিল শেখ হাসিনার সময়ে। কিন্তু বর্তমানে ওই প্রকল্প স্থগিত অবস্থায় আছে। আগরতলায় নির্মিত আন্তর্জাতিক স্টেশন কার্যত অকেজো হয়ে রয়েছে। এই পথে রেল চলাচল বন্ধ, আলোচনা বন্ধ।

যদিও কালাদান প্রকল্প কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতা এই প্রকল্পের অগ্রগতিকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। সেখানে সেনা জুন্টার নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির উপস্থিতি ভারতীয় বিনিয়োগ ও শ্রমিকদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একাধিকবার হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক মহলের একাধিক বিশেষজ্ঞ যেমন কর্নেল শান্তনু রায় এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য মনে করেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প পথ তৈরিই সময়ের দাবি। তবে তারা এটাও মানছেন যে, মিয়ানমার পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অনিন্দ্যোজ্যোতি মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ যত চীনমুখী হবে, ভারত তত বিকল্প কৌশলে এগোবে। তবে স্বাভাবিক বাণিজ্য রুদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, কালাদান প্রকল্প কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, তা চিকেনস নেকের যথাযথ বিকল্প হতে পারবে না।

দুই দেশের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ ও বাণিজ্যিক কৌশলের সমন্বয়ে ভারত এখন স্পষ্টভাবে বাংলাদেশকে বাইপাস করে এগোতে চাইছে। ফলে, শুধু কূটনৈতিক স্তরে নয়, এই উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চিত্রেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।