জুলাই সনদ চূড়ান্ত করে সরকারকে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের নেতারা।
সোমবার (০২ মে) সন্ধ্যায় খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এ আহ্বান জানান তারা। মঙ্গলবার (০৩ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে নেতারা বলেন, সরকারের দেওয়া সময়সীমার প্রথমার্ধের মধ্যে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বিরোধ নেই। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলো অধিকাংশ সংস্কার প্রস্তাবের সাথে একমত। ফ্যাসিবাদীদের বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়েছে। এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা না করলে বিরাজমান অস্থিরতা কমবে না।
তারা বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে অবিলম্বে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও সরকারের মধ্যে আস্থার জায়গাটি ঠিক রাখার মূল দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের। এক্ষেত্রে জনগণ সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
বৈঠকে নেতারা বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অপচয় ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে রেখে গেছে। বিশাল ঋণের বোঝার মধ্যে দেশকে ডুবিয়ে তারা পালিয়ে গেছে। অর্থ উপদেষ্টার উপস্থাপিত বাজেটে এ বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলার আরও ব্যবস্থা থাকার দরকার ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরের বাজেট ঘোষণা করা উচিত ছিল। এখন বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ, দুর্নীতির সব পথ বন্ধ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে। পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
খেলাফত মজলিস নেতারা আরও বলেন, পশুখাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে কোরবানি পশুর চড়া দাম এবং বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় এবার হয়তো অনেকের ঈদ আনন্দ পরিপূর্ণ করতে বাধাগ্রস্ত করবে। দরিদ্র-অসহায় মানুষও যাতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সামর্থ্যবানদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। কোরবানি পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকারকে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সড়ক ও ঘরবাড়ির নিরাপত্তায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বৈঠকে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য খেলাফত মজলিসের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ সংসদীয় আসনে তৎপরতা জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়। যথাসময়ে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় নেতা মো. জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, ডা. রিফাত হোসেন মালিক, মাওলানা শায়খুল ইসলাম, খন্দকার শাহাবুদ্দিন আহমদ, মুফতি আবদুল হক আমিনী, জিল্লুর রহমান, সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, মাওলানা আবদুস সামাদ, ফারুক আহমদ ভূঁইয়া, মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।