সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:
১৯৮তম ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত উপমহাদেশের প্রাচীন ও সবচেয়ে বড় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এবার ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। জামাতে ইমামতি করবেন কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই।
বুধবার (০৪ জুন) শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন শেষে পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন। তাদের জন্য সুপেয় পানি ও পর্যাপ্ত পরিমাণে অজুর পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুসল্লিদের কোনো শারীরিক সমস্যা হলে এখানে মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখানে কাজ করবেন। ওয়াচ-টাওয়ার ও মাঠের আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে যেন নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়। পর্যাপ্ত পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করবেন। দূর দূরান্তের মুসল্লিদের ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের জন্য জন্য ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ লাইনে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।https://www.kalbela.com/assets/news_photos/2025/06/04/inside-image/194574_1_1749042502.webp
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহা. কাজেম উদ্দীন বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকার ফুটেজগুলো আমরা সংগ্রহ করব। নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো ধরনের সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এছাড়া প্রত্যেকটি গেটে আর্চওয়ে থাকবে। এরমধ্যে দিয়ে এই নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হবে মুসল্লিদের। এছাড়াও প্রত্যেককে সার্চ করার জন্য মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। মুসল্লিদের প্রবেশ পথে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা ফোর্স দিয়ে চেকপোস্ট ডিউটি করা হবে। আশপাশে যেসব স্থাপনা রয়েছে, প্রত্যেকটা স্থাপনাতে পুলিশ ডিউটিতে থাকবে। ইতিমধ্যে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে কাজ করছে। আশপাশের যে হোটেল-রেস্টুরেন্ট গুলো রয়েছে সেগুলোকেও নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। এবার কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি। মাঠের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য থাকবে ওয়াচ টাওয়ার।
র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মো. আশরাফুল কবির বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহে আসা–যাওয়ার গেটগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবেন। ওয়াচ-টাওয়ারে স্বয়ংক্রিয় স্নাইপার রাইফেল থাকবে যেন যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধ করতে পারেন। বেশ কিছু প্যাট্রোল কার থাকবে, সেগুলো শহরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেবে। এছাড়াও ট্রেনে করে দূর-দূরান্ত থেকে যে সকল মুসল্লিরা ঈদ জামাতে অংশ নিতে আসেন তাদের নিরাপত্তায় ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে র্যাব মোতায়েন থাকবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগম।