, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা যাবে ফজরের কতক্ষণ আগ পর্যন্ত?

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
  • ১৩৮২ Time View


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

সালাত বা নামাজ ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত। এটি ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয় স্তম্ভ এবং প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর ফরজ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সালাতের গুরুত্ব ও নির্দেশনা এসেছে। যেমন সুরা নিসার ১০৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’

এই ফরজ সালাত ছাড়াও কিছু নফল নামাজ রয়েছে, যেগুলো অতিরিক্ত ইবাদত হিসেবে বিশেষ ফজিলত ও সওয়াব অর্জনের সুযোগ দেয়। তেমনই একটি ইবাদত হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।

তাহাজ্জুদের ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক সহিহ হাদিসে উল্লেখ আছে। আবু বিশর জাফর ইবনু আবু ওয়াহশিয়্যাহ (রাহ.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ফরজ সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো তাহাজ্জুদের সালাত। আর রমজানের সাওমের পর সর্বোত্তম সাওম হলো মুহররম মাসের সাওম। (সুনান আন-নাসায়ী, হাদিস : ১৬১৭)

আরেকটি হাদিসে আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে আল্লাহ তা’আলা প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং ঘোষণা করতে থাকেন : কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব? কে আছে এমন, যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তা তাকে দেবো? কে আছে এমন, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করবো? (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১০৭৯)

তাহাজ্জুদের নামাজ কখন পড়া যাবে?

তাহাজ্জুদের নামাজ মূলত রাতের নামাজ। এ নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় মধ্যরাতের পর থেকে।
হাদিসে এসেছে- রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হলে বা শেষ তৃতীয়াংশে তাহাজ্জুদের সময় উত্তম। তবে এর শেষ সীমা হলো সুবহে সাদিক, অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সময়।

ইবনু ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, সুবহে সাদিকের সঙ্গে সঙ্গে রাতের সালাত (তাহাজ্জুদ) ও বিতরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সুবহে সাদিকের পূর্বেই বিতর আদায় করে নেবে। (তিরমিজি, হাদিস: ৪৬৯)

বিতর ও তাহাজ্জুদের সম্পর্ক

অনেকে এশার পরেই বিতর আদায় করেন, আবার কেউ তাহাজ্জুদের পর বিতর নামাজ আদায় করেন। যদি কেউ তাহাজ্জুদের ইচ্ছা রাখেন, তবে এশার পর বিতর না পড়ে ঘুমিয়ে যাওয়া উত্তম। এরপর শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে বিতর পড়া সুন্নাতের অধিক অনুসরণ বলে গণ্য হয়।

সুতরাং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ের শেষ সময় হলো সুবহে সাদিকের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। ঘড়ির হিসেবে ফজরের আজান শুরুর ৫-৭ মিনিট আগে তাহাজ্জুদের নামাজ সম্পন্ন করে বিতরের নামাজ আদায় করা উত্তম। যারা আল্লাহর নৈকট্য ও ক্ষমা কামনা করতে চান, তাহাজ্জুদের এই বিশেষ সময়টি কাজে লাগিয়ে ইবাদতে মশগুল হওয়া তাদের জন্য মহা সওয়াবের সুযোগ।

Popular Post

তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা যাবে ফজরের কতক্ষণ আগ পর্যন্ত?

Update Time : ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

সালাত বা নামাজ ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত। এটি ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয় স্তম্ভ এবং প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর ফরজ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সালাতের গুরুত্ব ও নির্দেশনা এসেছে। যেমন সুরা নিসার ১০৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’

এই ফরজ সালাত ছাড়াও কিছু নফল নামাজ রয়েছে, যেগুলো অতিরিক্ত ইবাদত হিসেবে বিশেষ ফজিলত ও সওয়াব অর্জনের সুযোগ দেয়। তেমনই একটি ইবাদত হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।

তাহাজ্জুদের ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক সহিহ হাদিসে উল্লেখ আছে। আবু বিশর জাফর ইবনু আবু ওয়াহশিয়্যাহ (রাহ.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ফরজ সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো তাহাজ্জুদের সালাত। আর রমজানের সাওমের পর সর্বোত্তম সাওম হলো মুহররম মাসের সাওম। (সুনান আন-নাসায়ী, হাদিস : ১৬১৭)

আরেকটি হাদিসে আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে আল্লাহ তা’আলা প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং ঘোষণা করতে থাকেন : কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব? কে আছে এমন, যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তা তাকে দেবো? কে আছে এমন, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করবো? (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১০৭৯)

তাহাজ্জুদের নামাজ কখন পড়া যাবে?

তাহাজ্জুদের নামাজ মূলত রাতের নামাজ। এ নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় মধ্যরাতের পর থেকে।
হাদিসে এসেছে- রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হলে বা শেষ তৃতীয়াংশে তাহাজ্জুদের সময় উত্তম। তবে এর শেষ সীমা হলো সুবহে সাদিক, অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সময়।

ইবনু ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, সুবহে সাদিকের সঙ্গে সঙ্গে রাতের সালাত (তাহাজ্জুদ) ও বিতরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সুবহে সাদিকের পূর্বেই বিতর আদায় করে নেবে। (তিরমিজি, হাদিস: ৪৬৯)

বিতর ও তাহাজ্জুদের সম্পর্ক

অনেকে এশার পরেই বিতর আদায় করেন, আবার কেউ তাহাজ্জুদের পর বিতর নামাজ আদায় করেন। যদি কেউ তাহাজ্জুদের ইচ্ছা রাখেন, তবে এশার পর বিতর না পড়ে ঘুমিয়ে যাওয়া উত্তম। এরপর শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে বিতর পড়া সুন্নাতের অধিক অনুসরণ বলে গণ্য হয়।

সুতরাং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ের শেষ সময় হলো সুবহে সাদিকের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। ঘড়ির হিসেবে ফজরের আজান শুরুর ৫-৭ মিনিট আগে তাহাজ্জুদের নামাজ সম্পন্ন করে বিতরের নামাজ আদায় করা উত্তম। যারা আল্লাহর নৈকট্য ও ক্ষমা কামনা করতে চান, তাহাজ্জুদের এই বিশেষ সময়টি কাজে লাগিয়ে ইবাদতে মশগুল হওয়া তাদের জন্য মহা সওয়াবের সুযোগ।