, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবদল নেতাকে বহিষ্কার, দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ।

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ১০ ঘন্টা আগে
  • ১৩৭০ Time View


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

সিলেটের জাফলংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়ি বহর আটকে বিক্ষোভের দায়ে এ যুবদল নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ খান গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

এ ছাড়া ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৫ জুন) যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা যায়, শনিবার (১৪ জুন) সকাল ১১টার দিকে জাফলং পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনে শেষে ফেরার পথে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান ও মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়ীবহর আটকে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেওয়া হয়। ওই বিক্ষোভের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখায় যায় বিক্ষেভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবদল, ছাত্রদলের দায়ীত্বশীলসহ অনেক নেতাকর্মী। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় উল্লেখিত নেতাদের বিরুদ্ধে এ প্রদেক্ষেপ নেওয়া হয়।

আরও জানা গেছে, শনিবার জাফলংয়ে পরিদর্শন শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান ও মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তারা জানায়, পরিবেশবান্ধব পর্যটন বিকাশের জন্য সিলেটের পাথর কোয়ারী আর খুলে দেবে না সরকার। এমনকি লিজও দেওয়া হবে না ব্রিফিংয়ে জানান উপদেষ্টারা।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়ার দাবিতে যুবদল, শ্রমিকদল, ছাত্রদলের নেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু করেন জনতা। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা উপদেষ্টাদের গাড়ি বহর আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ ও বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে উপদেষ্টারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

জাফলংয়ের এ ঘটনায় বিব্রত হয়ে পড়েন উপদেষ্টারা। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী কোম্পানিগঞ্জ সাদাপাথর, উৎমাছড়া সফর বাতিল করেন উপদেষ্টারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের কয়েকজন স্থানীয় নেতাকে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভে নেতৃত্বে ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান, উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আব্দুল জলিল, সিনিয়র সহসভাপতি আমির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দিলু, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুহেল আহমদ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সভাপতি আজির উদ্দিন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এ ছাড়া সবাই সিলেট জেলা বিএনপি বহিষ্কৃত কোষাধ্যক্ষ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন ও  সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রফিকুল ইসলাম শাহ পরানদের অনুসারী।

অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট জেলা বিএনপি বহিষ্কৃত কোষাধ্যক্ষ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন কালবেলাকে বলেন, এরা কেউ আমার গ্রুপ করে না, আমার অনুসারী নয়। তারা সবাই শাহ পরানের গ্রুপ।

সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন দিনার কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটি আজির উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। জবাব দেওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনাটি আমরা জেনেছি। জাফলংয়ে সরকারের দুজন উপদেষ্টা এসেছেন। সেখানে দলীয় পরিচয়ে কেউ যাওয়ার কথা নয়। ইতিপূর্বে জাফলংয়ে বিভিন্ন পাথর ও বালু উত্তোলনের অভিযোগে বিএনপি নেতা শাহপরানসহ আরও অঙ্গ সংগঠনের অনেককে বহিষ্কার করা হয়েছে। শাহ আলম স্বপন আগেই বহিষ্কার হয়েছে বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন করায়। এখানে যারা ছিল এবং বলা হচ্ছে যাদের ইন্ধনে এটা হয়েছে তারা কেউ বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমে যাদের নাম এসেছে তারা আসলে বিএনপির অঙ্গ সংঘঠনের স্থানীয় নেতা। তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। ইতিপূর্বে যুবদলের জাহিদ খানকে বহিষ্কার করেছি এবং ছাত্রদলের যার নাম এসেছে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত বিষয়ে জিরো টলারেন্স। কোন নেতা অনিয়ম বা সম্মানহানিকর কাজে জড়িত পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।

Popular Post

যুবদল নেতাকে বহিষ্কার, দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ।

Update Time : ১০ ঘন্টা আগে


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

সিলেটের জাফলংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়ি বহর আটকে বিক্ষোভের দায়ে এ যুবদল নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ খান গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

এ ছাড়া ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৫ জুন) যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা যায়, শনিবার (১৪ জুন) সকাল ১১টার দিকে জাফলং পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনে শেষে ফেরার পথে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান ও মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়ীবহর আটকে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেওয়া হয়। ওই বিক্ষোভের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখায় যায় বিক্ষেভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবদল, ছাত্রদলের দায়ীত্বশীলসহ অনেক নেতাকর্মী। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় উল্লেখিত নেতাদের বিরুদ্ধে এ প্রদেক্ষেপ নেওয়া হয়।

আরও জানা গেছে, শনিবার জাফলংয়ে পরিদর্শন শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান ও মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তারা জানায়, পরিবেশবান্ধব পর্যটন বিকাশের জন্য সিলেটের পাথর কোয়ারী আর খুলে দেবে না সরকার। এমনকি লিজও দেওয়া হবে না ব্রিফিংয়ে জানান উপদেষ্টারা।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়ার দাবিতে যুবদল, শ্রমিকদল, ছাত্রদলের নেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু করেন জনতা। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা উপদেষ্টাদের গাড়ি বহর আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ ও বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে উপদেষ্টারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

জাফলংয়ের এ ঘটনায় বিব্রত হয়ে পড়েন উপদেষ্টারা। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী কোম্পানিগঞ্জ সাদাপাথর, উৎমাছড়া সফর বাতিল করেন উপদেষ্টারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের কয়েকজন স্থানীয় নেতাকে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভে নেতৃত্বে ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান, উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আব্দুল জলিল, সিনিয়র সহসভাপতি আমির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দিলু, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুহেল আহমদ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সভাপতি আজির উদ্দিন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এ ছাড়া সবাই সিলেট জেলা বিএনপি বহিষ্কৃত কোষাধ্যক্ষ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন ও  সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রফিকুল ইসলাম শাহ পরানদের অনুসারী।

অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট জেলা বিএনপি বহিষ্কৃত কোষাধ্যক্ষ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন কালবেলাকে বলেন, এরা কেউ আমার গ্রুপ করে না, আমার অনুসারী নয়। তারা সবাই শাহ পরানের গ্রুপ।

সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন দিনার কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটি আজির উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। জবাব দেওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনাটি আমরা জেনেছি। জাফলংয়ে সরকারের দুজন উপদেষ্টা এসেছেন। সেখানে দলীয় পরিচয়ে কেউ যাওয়ার কথা নয়। ইতিপূর্বে জাফলংয়ে বিভিন্ন পাথর ও বালু উত্তোলনের অভিযোগে বিএনপি নেতা শাহপরানসহ আরও অঙ্গ সংগঠনের অনেককে বহিষ্কার করা হয়েছে। শাহ আলম স্বপন আগেই বহিষ্কার হয়েছে বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন করায়। এখানে যারা ছিল এবং বলা হচ্ছে যাদের ইন্ধনে এটা হয়েছে তারা কেউ বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমে যাদের নাম এসেছে তারা আসলে বিএনপির অঙ্গ সংঘঠনের স্থানীয় নেতা। তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। ইতিপূর্বে যুবদলের জাহিদ খানকে বহিষ্কার করেছি এবং ছাত্রদলের যার নাম এসেছে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত বিষয়ে জিরো টলারেন্স। কোন নেতা অনিয়ম বা সম্মানহানিকর কাজে জড়িত পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।