, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরান এবার নতুন সামরিক নেতৃত্বে কাদের রাখলো।

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ৬ ঘন্টা আগে
  • ১৩৭৩ Time View


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

ইসরায়েলের বিমান হামলায় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা নিহত হওয়ার পর ইরান তাদের সামরিক বাহিনী ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)-এর নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন এনেছে। খবর আলজাজিরার। 

শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের একাধিক হামলায় নিহত হন ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সামরিক ও বেসামরিক নেতা। তাদের মধ্যে ছিলেন আইআরজিসির প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি। এই শূন্যতা পূরণে ইরান দ্রুত নতুন কয়েকজন অভিজ্ঞ কমান্ডারকে দায়িত্ব দিয়েছে।

চলুন দেখে নিই, ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর কারা নিহত হয়েছেন, কারা নতুন দায়িত্বে এসেছেন এবং এই পরিবর্তনের প্রভাব কী হতে পারে-

কাদের হারিয়েছে ইরান 

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সবচেয়ে উঁচু পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হন। তিনি ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে খামেনির অধীনে কাজ করতেন। তার সঙ্গে আরও নিহত হন অপারেশনস বিভাগের উপপ্রধান মেহেদি রাবানি এবং গোয়েন্দা বিভাগের উপপ্রধান গোলামরেজা মেহরাবি।

আইআরজিসির মহাকাশ বিভাগের আটজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তেহরানের এক ভূগর্ভস্থ বাংকারে বৈঠক করার সময় মারা যান। তাদের মধ্যে ছিলেন এই বিভাগের দীর্ঘদিনের প্রধান আলি আকবর হাজিজাদেহ এবং ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন বিভাগের কমান্ডাররাও।

কারা এসেছেন দায়িত্বে 

সশস্ত্র বাহিনীর নতুন প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদোলরহিম মোসাভি। তিনি এর আগে ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন। এই পদে তিনি প্রথম সেনাবাহিনীর কেউ, কারণ আগে সবাই ছিলেন আইআরজিসির সদস্য। মোসাভি ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর সামরিক প্রশিক্ষণ নেন এবং যুদ্ধের বিষয়ে অভিজ্ঞ এক কর্মকর্তা।

আইআরজিসির নতুন প্রধান হয়েছেন মোহাম্মদ পাকপুর। তিনি ১৯৮০-এর দশকে ইরাক যুদ্ধের সময় সাঁজোয়া ইউনিট ও একটি যোদ্ধা ডিভিশনের নেতৃত্ব দেন। ১৬ বছর ধরে তিনি আইআরজিসির স্থলবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন।

আরও একজন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা আমির হাতামিকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে সেনাবাহিনীর কমান্ডার করা হয়েছে। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।

আইআরজিসির মহাকাশ বিভাগের নতুন প্রধান হয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজিদ মোসাভি। তিনি ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন প্রযুক্তি এবং মহাকাশ উৎক্ষেপণ কর্মসূচিতে কাজ করেছেন। তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ‘পিতা’ নামে পরিচিত হাসান তেহরানি মোগাদ্দামের সঙ্গেও কাজ করেছেন।

কী বলছেন নতুন নেতারা

ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে জানিয়েছে নতুন নিয়োগ পাওয়া কমান্ডাররা। দেশজুড়ে এখন পোস্টারে লেখা, ‘আপনারা যুদ্ধ শুরু করেছেন, আমরা শেষ করব।’

ইতিমধ্যে ইরান থেকে ছোড়া শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

রোববার (১৬ জুন) ভোরে ইসরায়েলের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা চালায় ইরান। এর আগে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে ইরানের তেল, গ্যাস, স্টিল ও গাড়ি কারখানার ওপর। ইরান জানায়, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ শিশুসহ ২২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। রোববারও তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

Popular Post

ইরান এবার নতুন সামরিক নেতৃত্বে কাদের রাখলো।

Update Time : ৬ ঘন্টা আগে


সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

ইসরায়েলের বিমান হামলায় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা নিহত হওয়ার পর ইরান তাদের সামরিক বাহিনী ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)-এর নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন এনেছে। খবর আলজাজিরার। 

শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের একাধিক হামলায় নিহত হন ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সামরিক ও বেসামরিক নেতা। তাদের মধ্যে ছিলেন আইআরজিসির প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি। এই শূন্যতা পূরণে ইরান দ্রুত নতুন কয়েকজন অভিজ্ঞ কমান্ডারকে দায়িত্ব দিয়েছে।

চলুন দেখে নিই, ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর কারা নিহত হয়েছেন, কারা নতুন দায়িত্বে এসেছেন এবং এই পরিবর্তনের প্রভাব কী হতে পারে-

কাদের হারিয়েছে ইরান 

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সবচেয়ে উঁচু পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হন। তিনি ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে খামেনির অধীনে কাজ করতেন। তার সঙ্গে আরও নিহত হন অপারেশনস বিভাগের উপপ্রধান মেহেদি রাবানি এবং গোয়েন্দা বিভাগের উপপ্রধান গোলামরেজা মেহরাবি।

আইআরজিসির মহাকাশ বিভাগের আটজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তেহরানের এক ভূগর্ভস্থ বাংকারে বৈঠক করার সময় মারা যান। তাদের মধ্যে ছিলেন এই বিভাগের দীর্ঘদিনের প্রধান আলি আকবর হাজিজাদেহ এবং ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন বিভাগের কমান্ডাররাও।

কারা এসেছেন দায়িত্বে 

সশস্ত্র বাহিনীর নতুন প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদোলরহিম মোসাভি। তিনি এর আগে ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন। এই পদে তিনি প্রথম সেনাবাহিনীর কেউ, কারণ আগে সবাই ছিলেন আইআরজিসির সদস্য। মোসাভি ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর সামরিক প্রশিক্ষণ নেন এবং যুদ্ধের বিষয়ে অভিজ্ঞ এক কর্মকর্তা।

আইআরজিসির নতুন প্রধান হয়েছেন মোহাম্মদ পাকপুর। তিনি ১৯৮০-এর দশকে ইরাক যুদ্ধের সময় সাঁজোয়া ইউনিট ও একটি যোদ্ধা ডিভিশনের নেতৃত্ব দেন। ১৬ বছর ধরে তিনি আইআরজিসির স্থলবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন।

আরও একজন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা আমির হাতামিকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে সেনাবাহিনীর কমান্ডার করা হয়েছে। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।

আইআরজিসির মহাকাশ বিভাগের নতুন প্রধান হয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজিদ মোসাভি। তিনি ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন প্রযুক্তি এবং মহাকাশ উৎক্ষেপণ কর্মসূচিতে কাজ করেছেন। তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ‘পিতা’ নামে পরিচিত হাসান তেহরানি মোগাদ্দামের সঙ্গেও কাজ করেছেন।

কী বলছেন নতুন নেতারা

ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে জানিয়েছে নতুন নিয়োগ পাওয়া কমান্ডাররা। দেশজুড়ে এখন পোস্টারে লেখা, ‘আপনারা যুদ্ধ শুরু করেছেন, আমরা শেষ করব।’

ইতিমধ্যে ইরান থেকে ছোড়া শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

রোববার (১৬ জুন) ভোরে ইসরায়েলের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা চালায় ইরান। এর আগে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে ইরানের তেল, গ্যাস, স্টিল ও গাড়ি কারখানার ওপর। ইরান জানায়, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ শিশুসহ ২২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। রোববারও তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।