, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড় গোলাপগঞ্জে বিএমএসএফ এর কমিটি গঠন, সভাপতি বদরুল আলম, সম্পাদক শাহ আলম এবার শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ। শহীদুল আলমদের বহনকারী জাহাজ আ’টকের তথ্য জানাল ফ্রিডম ফ্লোটিলা সাংবাদিক ইলিয়াস : এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না নিজেদের নির্দেশনা মানছে সরকার? উপদেষ্টাদের ঘনঘন বিদেশ সফর ও প্রধান উপদেষ্টার বহর নিয়ে যত সমালোচনা। মৃত্যুর দুইদিন পার, দাফন নিয়ে সরকার-পরিবারের দ্বন্দ্বে হাসপাতালেই তোফায়েল আহমেদের মরদেহ। খুলনায় ঘুমন্ত যুবককে গু’লি করে হ’ত্যা। ৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি।
নোটিশ :
মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড় গোলাপগঞ্জে বিএমএসএফ এর কমিটি গঠন, সভাপতি বদরুল আলম, সম্পাদক শাহ আলম এবার শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ। শহীদুল আলমদের বহনকারী জাহাজ আ’টকের তথ্য জানাল ফ্রিডম ফ্লোটিলা সাংবাদিক ইলিয়াস : এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না নিজেদের নির্দেশনা মানছে সরকার? উপদেষ্টাদের ঘনঘন বিদেশ সফর ও প্রধান উপদেষ্টার বহর নিয়ে যত সমালোচনা। মৃত্যুর দুইদিন পার, দাফন নিয়ে সরকার-পরিবারের দ্বন্দ্বে হাসপাতালেই তোফায়েল আহমেদের মরদেহ। খুলনায় ঘুমন্ত যুবককে গু’লি করে হ’ত্যা। ৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি।

বাড়ির ছবি’ শেয়ার করে কেন তেহরান ছাড়ছেন ইরানিরা?

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০৩:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • ১৪২১ Time View

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

একটা খালি সোফা, পাশে রাখা স্যুটকেস—তেহরানের ফারসি ভাষাভাষী বাসিন্দারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাড়ি ছাড়ার ঠিক আগে এমনই একেকটা নিঃসঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে শেয়ার করছেন। ছবির ক্যাপশন, ‘বাড়ির শেষ ছবি’।

তারা জানেন না, আর কখনও নিজের ঘরে ফিরতে পারবেন কি না। জানেন না সেই প্রিয় জিনিসগুলো, যেগুলো ঘিরে জীবনের গল্প রচনা করেছিলেন, সেগুলোও আদৌ থাকবে কি না। ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় আতঙ্কিত হয়ে ইরানের রাজধানী তেহরান ছেড়ে যাচ্ছেন হাজারো মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্ককরণের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইরানি বাসিন্দাদের মধ্যে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ট্রেন্ড চলছে। এই ট্রেন্ডের অংশ হিসেবে অনেকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আগে ঘরের সাজানো গাছ, কাজের ডেস্ক, পরিবারের ছবি, পছন্দের কুশন বা স্মৃতিময় জিনিসগুলোর ছবি তুলে পোস্ট করছেন। ছবির ক্যাপশন বা শিরোনাম দেওয়া হচ্ছে, দ্য লাস্ট ফটো অব হোম বা বাড়ির শেষ ছবি।

একজন লিখেছেন, গাছগুলোকে পানি দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। এই ভেবে কষ্ট হচ্ছে যে আর হয়তো কখনও ফিরতে পারব না।

আরেকজন তার কাজের টেবিলের ছবি দিয়ে লিখেছেন, এই কম্পিউটার, হেডফোন পেতে আমাকে কত রাত জাগতে হয়েছে, মাথার চুল পেকে গেছে। আমি জানি না, ফিরলে এগুলো আদৌ এখানে থাকবে কি না।

ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার তেহরানের উত্তরের একটি বড় এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার বাসিন্দাদের ‘অবিলম্বে শহর ত্যাগের’ আহ্বান জানায়। এর আগেই অবশ্য অনেকেই শহর ছেড়ে বের হয়ে পড়েছিলেন। ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রথম চারদিনেই ইরানে অন্তত ২২৮ জন নিহত হয়েছেন। পাল্টা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন আরও ২৪ জন।

ইসরায়েলের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা। কিন্তু এখন হামলার বিস্তার পৌঁছে গেছে আবাসিক এলাকাতেও। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তেহরানজুড়ে।

এক বাসিন্দা লিখেছেন, এই শহরে কাজের স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। নিজ হাতে বানানো এই বাসায় একদিন ফিরতে পারব, এই বিশ্বাসেই বিদায় জানালাম।

তবে সবাই যেতে পারছেন না। কেউ থাকছেন বৃদ্ধ মা-বাবার জন্য, কেউ অসুস্থ সন্তানের কারণে, কারও আবার যাওয়ার কোনও উপায়ই নেই।

এক নারী বলেন, আমি অন্তঃস্বত্ত্বা। ছোট বাচ্চা আছে। এই অবস্থায় কোথায় যাব? যা কিছু গড়েছি, সবই তো এখানে।

আরেকজন জানালেন, গাড়ি আছে ঠিক, কিন্তু আটশ কিলোমিটার রাস্তায় যদি গাড়ি নষ্ট হয়, তখন কী করব?

একজন ৪০ বছর বয়সী নারী বললেন, সত্যি বলতে এতটাই ক্লান্ত যে এখন যদি সব ধ্বংস হয়, তাহলে আমি আর সন্তানদের নিয়ে এখানেই শেষ হয়ে যেতে চাই। আবার শুরু করার শক্তি আমার নেই।

ইরানের বাইরে থাকা লাখো প্রবাসী ইরানিও একই উদ্বেগে ভুগছেন। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন ইন্টারনেট সংযোগ বারবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়।

একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমরা ভাবতাম বাড়ির জন্য মন খারাপ করাই অভিবাসনের সবচেয়ে কঠিন দিক। কিন্তু এখন বুঝছি, যুদ্ধের সময় দূরে থাকার যন্ত্রণা কত ভয়াবহ।

একজন প্রবাসী বলেন, তেহরানে থাকা আত্মীয়কে বলেছি সরে যেতে, কিন্তু সে জানালো না আছে টাকা, না যাওয়ার জায়গা। কাজেই উপদেশ দিও না।

এই যুদ্ধ তেহরানবাসীর কাছে কেবল ভূরাজনৈতিক সংঘর্ষ নয়, বরং একটি অস্তিত্ব সংকট। ঘরবাড়ি, স্বপ্ন, স্মৃতি—সব কিছু নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে আছেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড়

বাড়ির ছবি’ শেয়ার করে কেন তেহরান ছাড়ছেন ইরানিরা?

Update Time : ০৩:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

একটা খালি সোফা, পাশে রাখা স্যুটকেস—তেহরানের ফারসি ভাষাভাষী বাসিন্দারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাড়ি ছাড়ার ঠিক আগে এমনই একেকটা নিঃসঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে শেয়ার করছেন। ছবির ক্যাপশন, ‘বাড়ির শেষ ছবি’।

তারা জানেন না, আর কখনও নিজের ঘরে ফিরতে পারবেন কি না। জানেন না সেই প্রিয় জিনিসগুলো, যেগুলো ঘিরে জীবনের গল্প রচনা করেছিলেন, সেগুলোও আদৌ থাকবে কি না। ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় আতঙ্কিত হয়ে ইরানের রাজধানী তেহরান ছেড়ে যাচ্ছেন হাজারো মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্ককরণের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইরানি বাসিন্দাদের মধ্যে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ট্রেন্ড চলছে। এই ট্রেন্ডের অংশ হিসেবে অনেকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আগে ঘরের সাজানো গাছ, কাজের ডেস্ক, পরিবারের ছবি, পছন্দের কুশন বা স্মৃতিময় জিনিসগুলোর ছবি তুলে পোস্ট করছেন। ছবির ক্যাপশন বা শিরোনাম দেওয়া হচ্ছে, দ্য লাস্ট ফটো অব হোম বা বাড়ির শেষ ছবি।

একজন লিখেছেন, গাছগুলোকে পানি দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। এই ভেবে কষ্ট হচ্ছে যে আর হয়তো কখনও ফিরতে পারব না।

আরেকজন তার কাজের টেবিলের ছবি দিয়ে লিখেছেন, এই কম্পিউটার, হেডফোন পেতে আমাকে কত রাত জাগতে হয়েছে, মাথার চুল পেকে গেছে। আমি জানি না, ফিরলে এগুলো আদৌ এখানে থাকবে কি না।

ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার তেহরানের উত্তরের একটি বড় এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার বাসিন্দাদের ‘অবিলম্বে শহর ত্যাগের’ আহ্বান জানায়। এর আগেই অবশ্য অনেকেই শহর ছেড়ে বের হয়ে পড়েছিলেন। ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রথম চারদিনেই ইরানে অন্তত ২২৮ জন নিহত হয়েছেন। পাল্টা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন আরও ২৪ জন।

ইসরায়েলের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা। কিন্তু এখন হামলার বিস্তার পৌঁছে গেছে আবাসিক এলাকাতেও। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তেহরানজুড়ে।

এক বাসিন্দা লিখেছেন, এই শহরে কাজের স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। নিজ হাতে বানানো এই বাসায় একদিন ফিরতে পারব, এই বিশ্বাসেই বিদায় জানালাম।

তবে সবাই যেতে পারছেন না। কেউ থাকছেন বৃদ্ধ মা-বাবার জন্য, কেউ অসুস্থ সন্তানের কারণে, কারও আবার যাওয়ার কোনও উপায়ই নেই।

এক নারী বলেন, আমি অন্তঃস্বত্ত্বা। ছোট বাচ্চা আছে। এই অবস্থায় কোথায় যাব? যা কিছু গড়েছি, সবই তো এখানে।

আরেকজন জানালেন, গাড়ি আছে ঠিক, কিন্তু আটশ কিলোমিটার রাস্তায় যদি গাড়ি নষ্ট হয়, তখন কী করব?

একজন ৪০ বছর বয়সী নারী বললেন, সত্যি বলতে এতটাই ক্লান্ত যে এখন যদি সব ধ্বংস হয়, তাহলে আমি আর সন্তানদের নিয়ে এখানেই শেষ হয়ে যেতে চাই। আবার শুরু করার শক্তি আমার নেই।

ইরানের বাইরে থাকা লাখো প্রবাসী ইরানিও একই উদ্বেগে ভুগছেন। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন ইন্টারনেট সংযোগ বারবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়।

একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমরা ভাবতাম বাড়ির জন্য মন খারাপ করাই অভিবাসনের সবচেয়ে কঠিন দিক। কিন্তু এখন বুঝছি, যুদ্ধের সময় দূরে থাকার যন্ত্রণা কত ভয়াবহ।

একজন প্রবাসী বলেন, তেহরানে থাকা আত্মীয়কে বলেছি সরে যেতে, কিন্তু সে জানালো না আছে টাকা, না যাওয়ার জায়গা। কাজেই উপদেশ দিও না।

এই যুদ্ধ তেহরানবাসীর কাছে কেবল ভূরাজনৈতিক সংঘর্ষ নয়, বরং একটি অস্তিত্ব সংকট। ঘরবাড়ি, স্বপ্ন, স্মৃতি—সব কিছু নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে আছেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা