, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • ১৩৭৫ Time View

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

আদালত অবমাননার মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ বুধবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলার অপর আসামি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনার কারাদণ্ড হলো।

কয়েক মাস আগে ‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—এমন একটি অডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। অডিওর এ বক্তব্য শেখ হাসিনার উল্লেখ করে তিনি ও শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার মামলা করে প্রসিকিউশন। সেই মামলায় আজ চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হলো।

রায়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজ সাবমিশনে তাঁরা বলেছিলেন, শেখ হাসিনার তর্কিত যে কনভারসেশন, সেটি পুলিশের সিআইডির মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তারা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিয়েছে, এখানে যে দুজন ব্যক্তির কনভারসেশন, তার একজন শেখ হাসিনা ও অন্যজন শাকিল আকন্দ বুলবুল। কনভারসেশনটি এআই জেনারেটেড নয়। অর্থাৎ প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়নি। এটি জেনুইন একটি কনভারসেশন।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, আদালত সবার আর্গুমেন্ট শুনে, সিআইডির ফরেনসিক রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে তর্কিত এই কনভারসেশনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী, সাক্ষী, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ যাঁরা এ বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের হত্যা করা, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং নানাভাবে তাঁদের হুমকি দিয়েছেন। যেটা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী এই ট্রাইব্যুনালের বিচারাধীন প্রক্রিয়াকে প্রেজুডিস করার অপরাধ। এই অপরাধ চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দণ্ডিত করেছেন। শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এটাও নির্দেশ দিয়েছেন যে যেদিন তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন অথবা পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে, তার পর থেকে এ সাজা কার্যকর হবে।

শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুল পলাতক আছেন। তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে দুটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তারপরও তাঁরা হাজির না হলে তাঁদের জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন ট্রাইব্যুনাল। সেই রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আজ ট্রাইব্যুনালে তাঁর যুক্তি তুলে ধরেন। অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানও তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ট্রাইব্যুনাল রায় দেন।

Popular Post

আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

Update Time : ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

আদালত অবমাননার মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ বুধবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলার অপর আসামি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনার কারাদণ্ড হলো।

কয়েক মাস আগে ‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—এমন একটি অডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। অডিওর এ বক্তব্য শেখ হাসিনার উল্লেখ করে তিনি ও শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার মামলা করে প্রসিকিউশন। সেই মামলায় আজ চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হলো।

রায়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজ সাবমিশনে তাঁরা বলেছিলেন, শেখ হাসিনার তর্কিত যে কনভারসেশন, সেটি পুলিশের সিআইডির মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তারা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিয়েছে, এখানে যে দুজন ব্যক্তির কনভারসেশন, তার একজন শেখ হাসিনা ও অন্যজন শাকিল আকন্দ বুলবুল। কনভারসেশনটি এআই জেনারেটেড নয়। অর্থাৎ প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়নি। এটি জেনুইন একটি কনভারসেশন।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, আদালত সবার আর্গুমেন্ট শুনে, সিআইডির ফরেনসিক রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে তর্কিত এই কনভারসেশনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী, সাক্ষী, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ যাঁরা এ বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের হত্যা করা, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং নানাভাবে তাঁদের হুমকি দিয়েছেন। যেটা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী এই ট্রাইব্যুনালের বিচারাধীন প্রক্রিয়াকে প্রেজুডিস করার অপরাধ। এই অপরাধ চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দণ্ডিত করেছেন। শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এটাও নির্দেশ দিয়েছেন যে যেদিন তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন অথবা পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে, তার পর থেকে এ সাজা কার্যকর হবে।

শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুল পলাতক আছেন। তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে দুটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তারপরও তাঁরা হাজির না হলে তাঁদের জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন ট্রাইব্যুনাল। সেই রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আজ ট্রাইব্যুনালে তাঁর যুক্তি তুলে ধরেন। অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানও তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ট্রাইব্যুনাল রায় দেন।