সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:
ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে রাজশাহীতে দাফন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরের সপুরা গোরস্তানে তাঁকে দাফন করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে চারটায় জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে তৌকিরের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেনসহ সেনা ও বিমানবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আত্মীয়স্বজন এবং সাধারণ লোকজন অংশ নেন।
জানাজার আগে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের জীবনী পড়ে শোনানো হয়। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম ও মামা মতিউর রহমান।
তহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সেই হতভাগ্য পিতা, যে নিজের সন্তানের লাশ কাঁধে নিয়েছি।’ ডুকরে কেঁদে উঠে তিনি সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। পাশাপাশি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের সবার জন্য দোয়া চান তৌকির ইসলামের বাবা।
এর আগে বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে তৌকিরের মরদেহ রাজশাহী সেনানিবাসে নেওয়া হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ৩টা ২০ মিনিটে সেনানিবাসের পাশেই নগরের উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরে ভাড়া বাসায় তৌকিরের মরদেহ নেওয়া হয়। এ সময় অসংখ্য মানুষ বাড়ির সামনে ভিড় করেন। বাড়ির সামনে কিছু সময় মরদেহবাহী ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়। পরে জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে নেওয়া হয় জানাজার জন্য।
তৌকির ইসলামের বাবা তহুরুল ইসলাম ব্যবসায়ী। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। তবে ২৫ বছর ধরে তিনি রাজশাহী শহরে বাস করেন। তাঁর একমাত্র ছেলে তৌকিরের বেড়ে ওঠা রাজশাহীতেই। তৌকির রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে পাবনা ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে এসএসসি ও ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে তিনি বিমানবাহিনীতে যোগ দেন।
বছরখানেক আগে তৌকির বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক। প্রশিক্ষণের শেষ ধাপে গত সোমবার একা (সলো) যুদ্ধবিমান নিয়ে আকাশে উড়েছিলেন তৌকির। একজন বৈমানিকের জীবনে থাকে এটি বিশেষ দিন। সেদিনই বিমানটি রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর আছড়ে পড়ে। এতে তৌকির প্রাণ হারান। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ৩২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।