সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহতদের একজন সায়মা আক্তার (৯)। সে ওই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সায়মার মরদেহ গাজীপুর মহানগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিপ্রবর্ধা এলাকার বাড়িতে পৌঁছায়। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় জামে মসজিদের মাঠে জানাজার পর মরদেহ বাড়ির উঠানেই দাফন করা হয়।
সায়মা আক্তারের বাবা শাহ আলম গাজীপুর মহানগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিপ্রবর্ধা গ্রামের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে তিনি উত্তরায় বসবাস করতেন। তিনি প্রাণ-আরএফএল কোম্পানিতে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘আমার এক বন্ধু ফোন করে জানায়, উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। খবর পেয়েই স্কুলে গিয়ে সারাদিন খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে পাইনি। রাত ৮টার দিকে জানতে পারি সিএমএইচে মরদেহ আছে। এই কষ্ট কীভাবে সহ্য করবো?’
সায়মার মা রিনা বেগম বলেন, ‘প্রতিদিনই মেয়েকে আমি স্কুলে নিয়ে যাই। কিন্তু, গতকাল যাইনি। আমার এক ভাই সায়মাকে স্কুলে নিয়ে যায়। দুপুরে ফেসবুকে জানতে পারি, আমার মেয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছে।’ রিনা বেগম ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে থাকেন। এ সময় আশপাশের প্রতিবেশী নারীরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
‘প্রতিদিন আমরা একসঙ্গে স্কুলে যেতাম। এখন আমি কাকে নিয়ে স্কুলে যাবো? তুই কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলি?’ ছোট বোনের লাশ দেখে কান্নায় চোখের জল মুছতে মুছতে নিহত সায়মার বড় ভাই সাব্বির হোসেন এসব কথা বলেন। বড় ভাই সাব্বিরের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ। ছোট বোনের স্মৃতি স্মরণ করে কাঁদছিলেন আর এভাবেই বলছিলেন যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহত সায়মা আক্তারের বড় ভাই সাব্বির হোসেন। সাব্বির চলতি বছর ওই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে।
সকাল থেকেই এলাকাবাসী তাদের বাড়িতে ভিড় করেন। আগুনে পুড়ে যাওয়া সায়মার মুখ দেখে জানাজায় অংশ নেওয়া অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সায়মার মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই শিশুর মৃত্যু শুধু তার পরিবার নয়, পুরো এলাকাকে শোকস্তব্ধ করে দিয়েছে।