আহমদ মারুফ, সিলেট
সিলেটের আলোচিত রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া এখন কোথায়? আকবর হোসেন ভূঁইয়া দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন দেখা দিয়েছে। বিশেষত আদালতের নির্দেশনা মেনে নির্ধারিত সময়ে আত্মসমর্পন না করায় এ গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে।
উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরদিনই (১১ আগস্ট) সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে যান পুলিশের বহিস্কৃত উপ পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া। এরপর ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালতে তার জামিন স্থগিত করে ১০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে এসে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হলেও তিনি এসে হাজির হননি।
উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরদিনই গত ১১ আগস্ট সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পান আকবর। এরপর ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালতে তার জামিন স্থগিত করে ১০ দিনের মধ্যে নি¤œ আদালতে এসে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হলেও তিনি এসে হাজির হননি।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিলেট মহানগর জজ আদালতে বিচারাধীন থাকা এ মামলার ধার্য তারিখ ছিলো। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির হননি বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) আশিক উদ্দিন। তিনি জানান, আকবরের অনুপস্থিতিতেই আজ দুপুরে এ মামলার শুনানি শেষ হয়। ফলে আকবর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন এমন শঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে।
উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হওয়া আকবর হোসেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই এই মামলার আসামি সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিছুদিন আগে আরেক আসামি সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই মো. হাসান উদ্দিন জামিনে বেরিয়ে পালিয়ে গেছে। এবার প্রধান আসামি আকবর জামিনে ছাড়া পেলো। সেও পালিয়েছে।’ খুনের আসামিরা জামিন পায় কেমনে?Ñএমন প্রশ্ন তুলেছেন নিহত রায়হান আহমদের মা সালমা বেগম।
দু’দিন আগে সিলেটে ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ কনফারেন্সেও বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। পলাতক আকবর হোসেনকে খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করার তাগিদও দেয়া হয় ওই বৈঠকে।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছিল। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তারের করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্যরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।
কারাগারে থাকা অবস্থায় গত মাসে (১০ আগস্ট) উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান আকবর। আর জামিনের আদেশের পরদিনই কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়। আর আকবর জামিন পাওয়ায় প্রতিবাদে সরব হয় নিহত রায়হানের পরিবার। পরে ১৪ আগস্ট চেম্বার জজ আদালতে তার জামিন স্থগিত করা হয় এবং পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু আকবর আদালতে হাজির হননি।
রায়হান হত্যা মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজল চৌধুরী জানিয়েছেন, হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালত সাবেক এসআই আকবরের জামিন বাতিল করে ১০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আত্মসমর্পণের সময় পেরিয়ে গেলেও সে আদালতে এসে হাজির হয়নি। ফলে সে এখন পলাতক।
সিলেট জেলা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট আশিক উদ্দিন জানান, ‘যেহেতু উচ্চ আদালতের কথামতো আকবর নিম্ন আদালতে আসেনি, সুতরাং এখন পলাতক হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, এসআই আকবর ছাড়া এ মামলায় আরও ৩ আসামি আগে জামিন পেয়েছিলেন। এর মধ্যে সাবেক এসআই হাসান উদ্দিন শুরু থেকেই পলাতক। বর্তমানে কারান্তরীণ রয়েছে মামলার অপর আসামি সাবেক এএসআই আশেক এলাহী। এ ছাড়া মামলার ৬ নম্বর আসামি কোম্পানীগঞ্জের সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমান ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তিনি ফ্রান্সে বসবাস করছেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
কী ঘটেছিল রায়হানের সাথে?
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেটের কাষ্টঘর এলাকা থেকে রায়হান আহমদ (৩৪)-কে আটক করে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর ভোররাতের দিকে অপরিচিত নম্বর থেকে রায়হান তার মামাতো ভাই আব্দুর রহমানকে ফোন করে টাকা নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আসতে বলেন।
আব্দুর রহমান জানান, ‘চারটা তেত্রিশ মিনিটে আমার ভাই ফোন দিয়েছিল বাসায়। বলেছিল টাকা নিয়ে তাড়াতাড়ি বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আসেন। তা না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আঙ্কেল (রায়হানের বাবা) টাকা নিয়ে ফাঁড়িতে গেলে বলা হয় যে রায়হান ঘুমিয়ে পড়েছে। যারা তাকে নিয়ে আসছে তারাও ঘুমিয়ে পড়েছে। আপনি সকাল নয়টা-দশটার দিকে আসবেন। টাকা ১০ হাজার সাথে করে নিয়ে আসবেন।’
সকালে রায়হানের বাবা ফাঁড়িতে গেলে সেখান থেকে তাঁকে হাসপাতালে যেতে বলা হয়। হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তিনি।
,
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড়
গোলাপগঞ্জে বিএমএসএফ এর কমিটি গঠন, সভাপতি বদরুল আলম, সম্পাদক শাহ আলম
এবার শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ।
শহীদুল আলমদের বহনকারী জাহাজ আ’টকের তথ্য জানাল ফ্রিডম ফ্লোটিলা
সাংবাদিক ইলিয়াস : এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না
নিজেদের নির্দেশনা মানছে সরকার?
উপদেষ্টাদের ঘনঘন বিদেশ সফর ও প্রধান উপদেষ্টার বহর নিয়ে যত সমালোচনা।
মৃত্যুর দুইদিন পার, দাফন নিয়ে সরকার-পরিবারের দ্বন্দ্বে হাসপাতালেই তোফায়েল আহমেদের মরদেহ।
খুলনায় ঘুমন্ত যুবককে গু’লি করে হ’ত্যা।
৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি।
নোটিশ :
মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড়
গোলাপগঞ্জে বিএমএসএফ এর কমিটি গঠন, সভাপতি বদরুল আলম, সম্পাদক শাহ আলম
এবার শান্তি রক্ষা মিশন নিয়ে বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ।
শহীদুল আলমদের বহনকারী জাহাজ আ’টকের তথ্য জানাল ফ্রিডম ফ্লোটিলা
সাংবাদিক ইলিয়াস : এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না
নিজেদের নির্দেশনা মানছে সরকার?
উপদেষ্টাদের ঘনঘন বিদেশ সফর ও প্রধান উপদেষ্টার বহর নিয়ে যত সমালোচনা।
মৃত্যুর দুইদিন পার, দাফন নিয়ে সরকার-পরিবারের দ্বন্দ্বে হাসপাতালেই তোফায়েল আহমেদের মরদেহ।
খুলনায় ঘুমন্ত যুবককে গু’লি করে হ’ত্যা।
৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি।
রায়হান হত্যাএসআই আকবর কী পালিয়ে গেছেন?
-
SURMA TV 24
- Update Time : ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- ১৩৯৮ Time View
Popular Post