সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:
মিথ্যা তথ্য দিয়ে গেজেটভুক্ত হওয়ায় ১২৮ জন ভুয়া জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল করেছে সরকার। এর মধ্যে গেজেটে দ্বৈততায় কারণে ২৩ জন এবং অহত নয়/ আন্দোলনে সম্পৃক্ত নয় এমন ১০৫ জনের গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, যারা প্রতারণার মাধ্যমে গেজেটভুক্ত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জুলাই গণভ্যুত্থানের আন্দোলনে সম্পৃক্ত না হয়েও জুলাই-যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৪ জন। এদের মধ্যে সিলেট বিভাগের ২৬ জন ভুয়া জুলাই-যোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। এছাড়া একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার গেজেটভুক্ত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে ২৩ জনের ক্ষেত্রে। এদের নামের গেজেট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১২৭ জনের গেজেট বাতিল হবে।
সিলেট বিভাগের ২৬ জনের মধ্যে রয়েছেন- মৌলভীবাজার জেলার মো. আজমল আলী, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার-২; নুর ইসলাম আহমেদ সুজন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -১৫; মাহমুদুল হাসান, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -১৬; তামিম আহমদ, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার-৪০; মিনহাজুর রহমান রিমন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৪১; দেলোয়ার আহমেদ সেলিম, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৪৬; মো. রিয়াদ মাহমুদ রকি, শ্রেণি-গ , গেজেট নাম্বার -৪৯; মো. আরিফুল ইসলাম, শ্রেণী -গ, গেজেট নাম্বার -৫০; শেখ মো. মাহফুজুর রহমান মাহিন, শ্রেণী -গ, গেজেট নাম্বার -৫১; জমির মিয়া, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫২; মো. রায়হান চৌধুরী, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫৪; মো. রুমান আহমেদ, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫৫; হুমায়ুন আহমদ, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫৬; তানবির মিয়া, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫৭; নবিবুর রহমান, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫৯; জিসাম হোসেন রাহী, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৭৩; ইমাদ উদ্দিন আহমেদ, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার- ৮০; মো. আলী হোসেন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৮৯; তারেকুল ইসলাম তারেক, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৯০; মো. সুমন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৯ এবং নাঈম আহমদ, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৯০৬।
এছাড়া সিলেট জেলার ফখরুল হাসান, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৩৫৬; সুনামগঞ্জ জেলার মো. রুহুল আমিন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৪৪৫; মোফাজ্জল হোসেন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৪৯১; মো. আফতাব উদ্দিন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫৭১; আল- হেলাল মো. ইকবাল মাহমুদ, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৫৮৫ এবং মো. মোবারক হোসেন, শ্রেণি-গ, গেজেট নাম্বার -৬০১ ভুয়া জুলাই-যোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ স্বীকৃতি পেতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে দেড় হাজারের বেশি আবেদন। নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে এসব ব্যক্তি সরকারি তালিকায় নাম তুলতে চান। এই স্বীকৃতি পেলে তাঁরা মাসিক ভাতাসহ সরকারি আরও সুবিধা পাবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) যাঁরা ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি, মূলত তাঁরাই এখন আবেদন করেছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁরা ‘জুলাই শহীদ’ স্বীকৃতি পাচ্ছেন; যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁরা ‘জুলাই যোদ্ধা’।
সরকারি গেজেটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ এবং আহত ১৩ হাজার ৮০০। যদিও শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের এই সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, আন্দোলনে অংশ না নিয়েও অনেকে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তাই এবার নতুন আবেদন সতর্কতার সঙ্গে যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে আহত ব্যক্তিদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ৪০ জেলা থেকে আবেদন জমা পড়েছে ১ হাজার ৫৪৩টি। তাঁদের ধরে ‘জুলাই যোদ্ধা’ স্বীকৃতি পেতে নতুন আবেবদনকারীর সংখ্যা বেড়ে হচ্ছে ২ হাজার ২৪৩।
নতুন আবেদনকারীর বেশির ভাগই দাবি করেছেন, তাঁরা জুলাই মাসে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়েছিলেন। অনেকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পুরোনো নথি ও ছবি যুক্ত করেছেন। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক আবেদনেই স্পষ্ট প্রমাণ নেই যে আবেদনকারীরা আদৌ ওই সময় আহত হয়েছিলেন কি না?
গণ-অভ্যুত্থানের সময় আহত না হয়েও প্রতারণার মাধ্যমে অনেকের নাম তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ভুয়া ২৫ আহত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। অভিযোগ ওঠার পর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের তালিকা আবার যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

SURMA TV 24 










