সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপড়েন, শুল্ক বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা—সব মিলিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বাড়ছে অনিশ্চয়তা। এই প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ের প্রধান বিকল্প হয়ে উঠেছে স্বর্ণ।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৫০০ ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বখ্যাত মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগান পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যেই স্বর্ণের দাম ছাড়িয়ে যেতে পারে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলার।
জেপি মরগানের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চলতি বছর প্রতি প্রান্তিকে গড় স্বর্ণ চাহিদা থাকতে পারে প্রায় ৭১০ টন, যা দামের উর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রাখতে সহায়ক। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের গড় দাম হতে পারে ৩ হাজার ৬৭৫ ডলার। তবে বাজার পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে আরও আগেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ ক্রয়ের গতি যদি হঠাৎ কমে যায়, তবে তা হবে বাজারের জন্য একটি বড় নেতিবাচক চ্যালেঞ্জ। একইভাবে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ট্যারিফের চাপ সামলেও শক্ত অবস্থানে থাকে এবং ফেড সুদের হার বাড়ায়, তবে তা স্বর্ণের চাহিদায় ধাক্কা দিতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মধ্যে স্বর্ণ হয়ে উঠছে বিনিয়োগকারীদের প্রধান নিরাপদ আশ্রয়। এরমধ্যেই স্পট গোল্ড মার্কেটে ২০২৫ সালের শুরু থেকে স্বর্ণের দাম ২৯ শতাংশ বেড়েছে এবং ইতিহাসে রেকর্ড ২৮ বার শীর্ষে উঠেছে। সবশেষ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো তা প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৫০০ ডলারের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছে—যা বিশ্ববাজারে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
এই পরিস্থিতিতে গোল্ডম্যান স্যাকস তাদের পূর্ববর্তী পূর্বাভাস সংশোধন করে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৭০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। এমনকি তারা সতর্ক করে বলছে, যদি বাজারে অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তাহলে সে সময়ের মধ্যেই প্রতি আউন্সে সোনার দাম ৪ হাজার ৫০০ ডলারে গিয়ে পৌঁছানো অসম্ভব নয়।
অন্যদিকে, রুপার বাজার নিয়ে তুলনামূলকভাবে সতর্ক রয়েছে জেপি মরগান। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, শিল্পক্ষেত্রে চাহিদা নিয়ে চলমান অনিশ্চয়তা রুপার দামের উপর তাৎক্ষণিক চাপ ফেলতে পারে। তবে ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে রুপার বাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে। সে সময়ের মধ্যেই ধাতুটির দাম বেড়ে প্রতি আউন্সে ৩৯ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে আশা করছে তারা।