, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুরু হয়নি এসপিএমের বাণিজ্যিক ব্যবহার কমিশনিংয়ের বছর পার হলেও।

  • SURMA TV 24
  • Update Time : ০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৩৮৫ Time View

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

কমিশনিংয়ের এক বছর পরও শুরু হয়নি সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের (এসপিএম) বাণিজ্যিক ব্যবহার। অপারেটর নিয়োগে দেরির কারণে থমকে আছে জ্বালানি তেল পরিবহনের আধুনিক এ পদ্ধতির কার্যক্রম। সম্প্রতি জ্বালানি খাতের বিশেষ আইন বাতিল করায় আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে নিয়োগ করতে হবে অপারেটর। আর এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পার হয়ে যেতে পারে চলতি বছরও, এমনটাই জানাচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট প্রস্তুত না হওয়ায় প্রাথমিক অবস্থায় ব্যবহার করা যাবে না এসপিএমের পূর্ণ সক্ষমতাও।
কমিশনিংয়ের বছর পার হলেও শুরু হয়নি এসপিএমের বাণিজ্যিক ব্যবহার।

দেশে জ্বালানি তেল পরিবহণে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে এসপিএম। এর ফলে বড় জাহাজ থেকে প্রথাগত লাইটারেজ পদ্ধতির বদলে তৈরি করা হয়েছে পাইপলাইন। গভীর সমুদ্র থেকে ১১০ কিলোমিটার করে দুটি সমান্তরাল পাইপলাইনে আমদানি করা জ্বালানি তেল যাবে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। এতে পরিবহনের সময় ১০ থেকে ১২ দিনের বদলে নেমে আসবে ৪৮ ঘণ্টায়। বছরে সাশ্রয় হবে ৮০০ কোটি টাকা।

গত বছরের মার্চে সফলভাবে সম্পন্ন হয় এসপিএমের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ও কমিশনিং। আগস্টে চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রকল্পটি বুঝেও নেয় বিপিসি। তবে এতসবের পরও অলস পড়ে আছে স্থাপনাটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে বিদেশি অপারেটর নিয়োগে দেরির কারণেই এখনো অধরা এসপিএমের সুফল। বকেয়া কাজ শেষ করে চলতি বছরে এসপিএমের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু নিয়ে আছে সংশয়।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান, যারা আগে এই কাজটি করেছে বিশেষ আইনে তাদের দিয়েই করানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে বিশেষ আইন যেহেতু এখন আর নেই, তাই নতুন করে আবার টেন্ডার করতে হচ্ছে।

এতে কিছুটা সময় লাগছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগস্টের দিকে চুক্তি হলে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিক অপারেশনে যাওয়া যাবে।

এসপিএম প্রকল্পের আওতায় বছরে সঞ্চালন করা যাবে ৪৫ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল, আর একই পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল। বিপরীতে দেশে এখন বার্ষিক পরিশোধন সক্ষমতা আছে কেবল ১৫ লাখ মেট্রিক টনের। সেক্ষেত্রে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণের আগ পর্যন্ত সংশয় আছে পূর্ণ ক্ষমতায় এসপিএমের ব্যবহার নিয়ে।

দেশের জ্বালানি খাতে একটি মাইলফলক প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত এসপিএম। তবে এ প্রকল্পটির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সমানতালে বাড়েনি দেশের জ্বালানি তেল পরিশোধন সক্ষমতা। ফলে এসব অবকাঠামোর বড় একটি অংশই দীর্ঘসময় ধরে অলস পড়ে থাকার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, খরচ কমানোর জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিটটি প্রস্তুত করা দরকার।

২০১৫ সালে ডিপিপি তৈরির পর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এসপিএম বাস্তবায়নের প্রাথমিক লক্ষ্য থাকলেও পরে দফায় দফায় বাড়ে প্রকল্পের মেয়াদ; ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ, প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা।

Popular Post

শুরু হয়নি এসপিএমের বাণিজ্যিক ব্যবহার কমিশনিংয়ের বছর পার হলেও।

Update Time : ০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

সুরমা টিভি ২৪ নিউজ ডেস্ক:

কমিশনিংয়ের এক বছর পরও শুরু হয়নি সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের (এসপিএম) বাণিজ্যিক ব্যবহার। অপারেটর নিয়োগে দেরির কারণে থমকে আছে জ্বালানি তেল পরিবহনের আধুনিক এ পদ্ধতির কার্যক্রম। সম্প্রতি জ্বালানি খাতের বিশেষ আইন বাতিল করায় আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে নিয়োগ করতে হবে অপারেটর। আর এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পার হয়ে যেতে পারে চলতি বছরও, এমনটাই জানাচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট প্রস্তুত না হওয়ায় প্রাথমিক অবস্থায় ব্যবহার করা যাবে না এসপিএমের পূর্ণ সক্ষমতাও।
কমিশনিংয়ের বছর পার হলেও শুরু হয়নি এসপিএমের বাণিজ্যিক ব্যবহার।

দেশে জ্বালানি তেল পরিবহণে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে এসপিএম। এর ফলে বড় জাহাজ থেকে প্রথাগত লাইটারেজ পদ্ধতির বদলে তৈরি করা হয়েছে পাইপলাইন। গভীর সমুদ্র থেকে ১১০ কিলোমিটার করে দুটি সমান্তরাল পাইপলাইনে আমদানি করা জ্বালানি তেল যাবে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। এতে পরিবহনের সময় ১০ থেকে ১২ দিনের বদলে নেমে আসবে ৪৮ ঘণ্টায়। বছরে সাশ্রয় হবে ৮০০ কোটি টাকা।

গত বছরের মার্চে সফলভাবে সম্পন্ন হয় এসপিএমের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ও কমিশনিং। আগস্টে চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রকল্পটি বুঝেও নেয় বিপিসি। তবে এতসবের পরও অলস পড়ে আছে স্থাপনাটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে বিদেশি অপারেটর নিয়োগে দেরির কারণেই এখনো অধরা এসপিএমের সুফল। বকেয়া কাজ শেষ করে চলতি বছরে এসপিএমের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু নিয়ে আছে সংশয়।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান, যারা আগে এই কাজটি করেছে বিশেষ আইনে তাদের দিয়েই করানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে বিশেষ আইন যেহেতু এখন আর নেই, তাই নতুন করে আবার টেন্ডার করতে হচ্ছে।

এতে কিছুটা সময় লাগছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগস্টের দিকে চুক্তি হলে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিক অপারেশনে যাওয়া যাবে।

এসপিএম প্রকল্পের আওতায় বছরে সঞ্চালন করা যাবে ৪৫ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল, আর একই পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল। বিপরীতে দেশে এখন বার্ষিক পরিশোধন সক্ষমতা আছে কেবল ১৫ লাখ মেট্রিক টনের। সেক্ষেত্রে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণের আগ পর্যন্ত সংশয় আছে পূর্ণ ক্ষমতায় এসপিএমের ব্যবহার নিয়ে।

দেশের জ্বালানি খাতে একটি মাইলফলক প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত এসপিএম। তবে এ প্রকল্পটির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সমানতালে বাড়েনি দেশের জ্বালানি তেল পরিশোধন সক্ষমতা। ফলে এসব অবকাঠামোর বড় একটি অংশই দীর্ঘসময় ধরে অলস পড়ে থাকার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, খরচ কমানোর জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিটটি প্রস্তুত করা দরকার।

২০১৫ সালে ডিপিপি তৈরির পর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এসপিএম বাস্তবায়নের প্রাথমিক লক্ষ্য থাকলেও পরে দফায় দফায় বাড়ে প্রকল্পের মেয়াদ; ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ, প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা।