অনলাইন নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর দাবি জানিয়েছে সড়কে আন্দোলন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার (২ মে) জুমার নামাজ শেষে ‘আফতাবনগর সচেতন নাগরিক সমাজ’র ব্যানারে আফতাবনগরের মসজিদগুলো থেকে বের হয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন।
বাসিন্দারা বলছেন— এবার কোনোভাবেই আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট বসতে দেওয়া হবে না।
এসময় তারা আফতাবনগরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। তাদের হাতে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন। তাতে লেখা ছিল ‘আবাসিক এলাকায় গরুর হাট মানি না মানব না’, ‘কোনোভাবেই আফতাবনগরে গরুর হাট বসানো যাবে না’, ইত্যাদি। এসময় তারা হাট না বসানোর দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষে স্থায়ী বাসিন্দা কাজী আলমগীর বলেন, এই জায়গা তো ব্যক্তি মালিকানার, প্লট, ফ্ল্যাট মালিক আমরা এলাকাবাসী। আমাদের ব্যক্তিগত জায়গায় সিটি করপোরেশন কীভাবে হাট বসাতে চায়। এখানে হাট বসলে পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত আমাদের নানা সমস্যা পোহাতে হয়। নোংরা, দুর্গন্ধে আমরা টিকতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, আফতাবনগরে ৫ হাজার প্লটে মানুষ বসবাস করছে। এখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা, এতিমখানা, হাসপাতাল আছে। এখানে কেন হাট বসবে? তাও আবার ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায়। অন্যবার হাট বসানোর পরে এমন অবস্থা হয়– মানুষ অসুস্থ হলেও হাসপাতালে নেওয়ার অবস্থা থাকে না। সবমিলিয়ে আমরা কোনোভাবেই এবার পশুর হাট বসতে দেবো না।
স্থানীয় এক মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, অন্যবার গরুর হাটের অপরিকল্পিত পানির লাইনের সংযোগ এবং পরে সেগুলো সঠিকভাবে মেরামত না করার কারণে এলাকাবাসীকে সারা বছর ময়লা পানি ব্যবহার করতে হয়েছে। গরুর হাট শেষ হওয়ার পরও ময়লা আবর্জনা মাসের পর মাস পরিষ্কার না করায় এলাকাবাসীকে দুর্গন্ধ ও মশার অত্যাচারে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হয়েছে।
আফতাবনগর সোসাইটির নেতা মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা এবার কোনোভাবেই হাট বসতে দেবো না। আমরা এলাকাবাসী একতাবদ্ধ, তাই হাট বসানোর পাঁয়তারা করলে— আমরা সম্মিলিতভাবে চক্রান্ত রুখে দেবো।
মানববন্ধনে এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বাড্ডা থানাধীন আফতাবনগর জহুরুল ইসলাম সিটি, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের একটি বৃহৎ আবাসিক এলাকা। বর্তমানে এখানে প্রতি ব্লকে প্রচুর পরিমাণ ইমারত নির্মিত হয়েছে এবং বিচারপতি, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইনজীবীসহ প্রায় তিন লাখ মানুষ বসবাস করেন। অতীতে এখানে বাড়িঘর ও লোকসংখ্যা কম ছিল বলে গরুর হাট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন এখানে হাট বসলে এলাকাবাসীকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
বাসিন্দারা আরও বলেন, আফতাব নগরবাসীর দুরবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটি-২০২৪ এর ঈদুল আজহার আগে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করতে বাধ্য হয়। আদালত বিস্তারিত শুনে আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় গরুর হাট বসানোর ওপর স্টে-অর্ডার দেন। যার কারণে ২০২৪ সালের কোরবানির ঈদের আগে দুই সিটি করপোরেশনই আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় গরুর হাটের টেন্ডার বাতিল করে। আদালতের আদেশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় গরু-ছাগলের হাট বসানোর অনুমতি না দেওয়ার জন্য আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন জানাচ্ছি।
২/৫/২০২৫/সুরমা টিভি/শামীমা